কিংশুক চক্রবর্তীর একগুচ্ছ কবিতা
প্রকাশিত : ১৭:০১, ২৫ মে ২০২২ | আপডেট: ১৮:৫১, ২৫ মে ২০২২
কবি কিংশুক চক্রবর্তী।
আত্মহনন
তুমি কোন ফুয়েরার
বাঙ্কারে, তোমার নিরাপদ দুর্গে
লৌহপেটিকায় আগলে রেখেছো সম্ভ্রম
আর নগ্ন উল্লাসে
নিভৃতে কলুষিত হাত দুর্যোধনের -
যেখানে দ্রৌপদী একা,
ফিরে যাবে -
রাজদন্ডের হাতে আঁকা ছবি;
তার কাপড়ের খুঁট ধরে রাখো হাতে।
দুর্বল, মূক, দিশাহারা,
সে কৃষ্ণবিহীন কলিকালে
আঁকড়ে জীবন।
সময়ও মাপছে হাওয়ার গতিফের;
পালটাবে একদিন,
বহু বিষণ্ণ রাত্রির শেষে
যখন তুমি
আর মুখোমুখি
আত্মহনন!
পিকচার পারফেক্ট
কলমের কাছে এলে
ক্যামেরার চোখ খুলে
এক ফালি রোদের
সাথে জড়ো হয়
হাজারটা মেঘ।
ঠেলাঠেলি শেষে
আউট অফ ফোকাস ছবিতে
ব্যপ্ত ডার্ক রুম।
বিপর্যস্ত রুল অফ থার্ডে
শীর্ণকায়া আলোর
অগোছালো আঁচল
ফ্রেমের গা ঘেঁষে উষ্ণতা খোঁজা
বিষণ্ণ বিকেল।
পর্দা সরাও, কবি
চিকন আলোর মুখে এখনও
লেগে থাকা হাসি
ভরে যাক
অজস্র ফ্ল্যাশে।
ফাঁসি
আবেগের উছ্বাসে শব্দরা ক্রীতদাস
বুনন মাধুর্যে চেয়েছি
হয়ে উঠুক
এনডুরা রোসেস'র কালিনান ডায়মন্ড
ওরা ইকুয়েডরের গোলাপ থেকে কম কিছু ছিল না।
ঝরে গেলো তবু হরফেরা -
অজুহাতের পালক স্পর্শে
ওড়ালে খোলামকুচির মতো।
কত করুণা তোমার!
শীতের রোদ্দুর মাখা মৃত্যুর ফরমান
দিয়ে যাও অনায়াসে;
বলতে পারা যাবে না কখনো তাও
খুনি বিচারক তুমি
অথবা জল্লাদ
দুলছি হাওয়ায়
কারণেরা গলার ফাঁসে
অছিন্নসংশয়
বিঁধে থাকে কাঁটার মতো।
পায়ের আঙ্গুল ছুঁয়ে থাকে মাটি
কতখানি গভীরতা থেকে গেলে এ চাওয়ায়
সকালের প্রতীক্ষা থাকে!
অ্যামিবা জীবন
পিছনে নিবদ্ধ থাকলে দৃষ্টি
সামনে গড়িয়ে যাচ্ছি নিশ্চিত খাদে।
ছাড়ো বস্তাপচা আর্গুমেন্ট।
খুঁজতে যেও না সৃষ্টিলগ্নের পাঞ্জাবি
এখনও কারো ধরে আছে
সাইফোচিলাস কাঁচপোকার উজ্জ্বল রং।
অবিশ্বাসের নেকড়ে
রয়েছে ইতিহাসের পাতা জুড়ে -
আর ছিল সন্ত্রস্ত চোখ।
পাথরের বল্লম
সময়ের জেটে সুপারসনিক মিসাইল -
সব আছে - শুধু ঘুম নেই।
বেদাগ ছিলাম না কেউ।
খুলতেই পারো
চ্যাপ্টার অফ কনভেনিয়েন্স ;
অসতর্কে তোমার দানিশ গামবিটে
হয়ে যেতে পারি ছিন্নবিচ্ছিন্ন।
সংযমের নিরক্ষ রেখায় হাঁটবে পৃথিবী কতকাল
কতকাল পিটকেইরর্ণ দ্বীপের নিসর্গে
আটকে থাকবে সময়!
উপায় নেই। ভরসার আগুনে নিক্ষেপিত হোক
সমস্ত প্রাচীরের ইতিহাস।
নইলে ফস্কা গেরোয়
গনগনে আঁচের ইন্ধনে
কয়েক কোটি রিভার্সে
কি চাও-
অ্যামিবা জীবন?
নোটিশ বোর্ড
তোমার হোয়াটস্যাপ বা ইন্সটা স্টোরিতে
কথাগুলো
জাস্ট ভাবনার ধোঁয়া নয়
যে কুন্ডলি পাকিয়ে মেঘ -
বৃষ্টি ঝরাবে
আর আচমকা বারিশেতে আনমনা হেঁটে যাবে
ব্যস্ত শহর। ভিজে জামা
শুকোবে শরীরে
সময়ের হাওয়া মেখে গায়ে।
আমার মতো আরও কেউ ছিল নাকি
দেখেছে নিষাদের চোখ?
বুকের পাঁজর ছিঁড়ে
শলা তার
গেঁথে রাখে পিনে
মৃত্যুর পরোয়ানা কুয়াশার খামে
বড় অন্ধকার - বড় অন্ধকার-
এসি