‘পরকীয়ায় ভড়কে যাওয়ার কিছু নেই’
প্রকাশিত : ১৯:১৪, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২১:২০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
তরুণ কবি ও কথাসাহিত্যিক ফারজানা মিতু। সুন্দর গল্প ও মর্মস্পর্শী বর্ণনা যার উপন্যাসের প্রধান অনুসঙ্গ। লেখার প্রতি রয়েছে তার নিরন্তর ভালোবাসা। গ্রন্থভুক্ত তার পঙক্তির পরতে পরতে পাওয়া যায় ভিন্নমাত্রা। সম্পর্কের বিশ্লেষণ এবং অভিজ্ঞতার বিচিত্র প্রভাব পাওয়া যায় তার লেখায়। বিষয় বৈচিত্র্যেও তা হয়ে উঠে অনন্য। লেখনির মাধ্যমে তার বিস্তার ও দিক অন্বেষণ যথার্থই সাড়া জাগিয়েছে।
প্রথম জীবনে ফারজানা মিতু কবিতা দিয়েই সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। এরপর গল্প ও উপন্যাস। অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৮-এ প্রকাশিত হয়েছে তার চারটি বই। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত উপন্যাস ‘পরকীয়া’। এটি পাঠক হৃদয় ছুঁয়েছে। এতে পাওয়া যাবে ভিন্ন জীবনের চিত্র, বৈচিত্রতা। জীবনের নানাচিত্রে নান্দনিক উপন্যাসে রূপান্তর করেছেন ‘পরকীয়া’।
সাম্প্রতিক সময়ের সাহিত্য, লেখালেখি, একুশে বইমেলার নানাদিক নিয়ে মিতুর সঙ্গে কথা হয় একুশে টেলিভিশন অনলাইনের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলী আদনান।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ সাহিত্যে কেন এলেন, কিভাবে এলেন?
ফারজানা মিতুঃ সাহিত্যের ধারায় কীভাবে চলে এলাম সেটা নিজেও সেভাবে বলতে পারবো না। নানা সময়ে ছোট করে ২-৩ লাইনের কথা লিখতাম, কখনও বন্ধুদের কার্ডে কিংবা চিঠিতে। আমার আম্মা যেহেতু লেখালেখি করতেন তাই সেগুলো পড়া হতো। আর ওই বয়সেই মনে হতো, এই লাইনটা না হয়ে অন্যটা হলে ভালো হতো। সাহিত্য তখন থেকেই বুঝা শুরু। ক্লাস নাইন টেনে থাকতেই পড়া শুরু হয়েছিলো কঠিন সব বই। সমরেশ, শীর্ষেন্দু, সুনীল সবই একে একে পড়া শুরু। তারপর হুমায়ূন আহমেদ।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ মেলায় এবার আপনার কি বই এসেছে?
ফারজানা মিতুঃ মেলায় এবার ৪টি বই এসেছে। দিব্যপ্রকাশ থেকে এসেছে ‘প্রযত্নে সে’ এবং ‘তোমার মুঠোয় বন্দী আমার আকাশ’। দেশ পাবলিকেশন্স থেকে ‘পরকীয়া’ আর অন্বয় প্রকাশ থেকে ‘ফেরা না ফেরার গল্প’।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ নতুন বই সম্পর্কে বলুন?
ফারজানা মিতুঃ আমি বরাবরই রোমান্টিক ঘরানার কাহিনী লিখি। তাতে কষ্ট, প্রেম, বিরহ আর না পাওয়াগুলোই উঠে আসে। এবারও তাই। তবে কাহিনীর বৈচিত্র্য অবশ্যই আছে। একেকটি বইয়ে একেক রকম স্বাদ দিতে চেয়েছি আর পাঠক সেই স্বাধটুকু পুরোটাই পাবে বলেই আমার বিশ্বাস।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ পরকীয়ার পাঠক সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
ফারজানা মিতুঃ পরকীয়া বইটি ইতোমধ্যে অনেক পাঠকের হাতে পৌঁছেছে। রিভিউ যা পেয়েছি পাঠকের কাছে সেটা খুবই পজিটিভ। আমি বরাবরই বলেছি বই নিয়ে সমালোচনা করার আগে বইটি পড়ুন। পরকীয়া নাম দেখে ভড়কে যাবার কিছু নেই। বইটি না পড়লে কখনই জানতে পারবে না আমি বইটিতে কী বলতে চেয়েছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ বছরের অন্য সময় প্রকাশ না করে মেলায় কেন বই প্রকাশ করেন? ফারজানা মিতুঃ আমি ২০১৫-২০১৬ সালে অনেকগুলো বই মেলার বাইরের সময়ে এনেছি; কিন্তু মেলায় যেভাবে পাঠকের আগ্রহ আর উদ্দীপনা দেখতে পাই সেটা অন্য সময়ে দেখা ভার। লেখক হিসেবে আমাদের কাছে পাঠকই প্রধান। তাই এখন চেষ্টা করি মেলাতেই বই নিয়ে আসার।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ লেখালেখি চর্চার ক্ষেত্রে প্রেরণা বা প্রভাব কার কাছ থেকে বা কীভাবে? ফারজানা মিতুঃ আমি সবসময়ই বলে থাকি কারও প্রেরণা কিংবা প্রভাবে আমি লেখালেখিতে আসিনি। আমাকে সেভাবে প্রেরণা প্রথম অবস্থায় কেউ দেয়নি। এখন অনেকেই দিয়ে থাকে কাছের মানুষেরা ছাড়াও দূরের মানুষেরাও।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ একুশে বইমেলার প্রাপ্তি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন…
ফারজানা মিতুঃ একটা জাতি কখনোই শিক্ষা ছাড়া এগিয়ে যেতে পারে না। আর বই প্রতিটা মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে মতোই অপরিহার্য। একটা ভালো বই একজন মানুষের জীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। আর আমাদের দেশে যেহেতু বই কেনার প্রচলনটা বইমেলাতেই বেশি। তাই বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। আর এই সময়েই লেখক আর পাঠক এভাবে কাছাকাছি আসতে পারে। লেখক আর পাঠকের এমন সেতুবন্ধন বইমেলা ছাড়া পাওয়া সম্ভব না।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
ফারজানা মিতুঃ লেখালেখি আমার সবটুকু জুড়েই, তাই লিখে যাবো যতোদিন পারি। এবার পরকীয়া নিয়ে বড় পরিসরে যেমন লিখেছি তেমনি সামনেও এমনকিছু আরও লেখার আশা রাখছি। প্রতিটা মুহূর্তে প্রতিটি লেখায় আমি নিজেকে ভাঙি আর গড়ি। আগামীতেও আরও সমৃদ্ধশালী লেখা দিতে পারবো বলেই আশা করছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।
ফারজানা মিতু : আপনার জন্যও শুভকামনা।
/ এআর /