রবীন্দ্রনাথকে ভালোভাবে চর্চা করতে হবে : আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
প্রকাশিত : ২৩:৩৯, ২ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১০:৫৪, ৩ মার্চ ২০১৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সতীর্থ ঊনসত্তরের চার সতীর্থের বইয়ের প্রকাশনা উৎসব, আলোচনা ও আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (২ মার্চ) বিকালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে স্মৃতিচারণ, প্রাণবন্ত আলোচনা ও আড্ডার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
মহিউদ্দিন আহমেদ, শামীম আজাদ, সেলিম জাহান ও নরেশ ভূঁইয়া এই চার সতীর্থ এবারের একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে তাদের চারটি বই নিয়ে আসেন। অনুষ্ঠানে তারা তাদের আলোচনায় পুরনো দিনের স্মৃতিকে তাদের অন্যান্য সতীর্থ ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সামনে তুলে ধরেন।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমি একজন শিক্ষক। এই জায়গায় আমি কখনো কম্প্রোমাইজ করিনা। শিক্ষকতার মাধ্যমেই আমি সমাজে আলো বিতরণ করতে চাই। আজ রবীন্দ্রনাথকে অনেকেই ধারণ করতে পারছে না। রবীন্দ্রনাথকে আমরা যত বেশি দেবতা মনে করছি তত বেশি অশিক্ষিত হচ্ছি। এটি হচ্ছে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে চর্চার অভাবে। তাই রবীন্দ্রনাথের ওপর এখানে আমরা একটা প্রোগ্রাম চালু করেছি। তাকে আমাদের ভালোভাবে চর্চা করা দরকার।
মহিউদ্দিন আহমেদ এর ‘এদেশে একদিন যুদ্ধ হয়েছিল’ বই এর ওপর আলোকপাত করতে গিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরে এদেশে কি হবে সেটা যদি মানুষ জানতো তাহলে কেউ যুদ্ধ করতো না। মুক্তিযুদ্ধের পর এরশাদ ৯ বছর দেশ শাসন করবে এটা জানলে এদেশ কখনো স্বাধীন হতো না। তবে মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমেই আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পাই। আমরা এই শহরে মুক্তভাবে চলার স্বাধীনতা পাই।
তিনি বলেন, আজকে ঢাকা থেকে ঢাকায় যেতেই আমাদের সময় শেষ। জ্যামের মধ্যে পড়ে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। অথচ আমাদের নেতারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যান। কত সুন্দর সুন্দর শহর দেখেন। কিন্তু সেই সব শহরের মতো আমাদের এই শহরকে পরিবর্তন করতে পারেন না। কোনো কিছু সেখান থেকে নিয়ে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
অনুষ্ঠানে চার সতীর্থরাও বক্তব্য রাখেন। সেখানে ‘বংশবীজ’ বইয়ের লেখক শামীম আজাদ বলেন, আমি আমার স্মৃতিকে এই বইয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেছি। আমি বিলেতে গেছি প্রায় ত্রিশ বছর হয়ে গেল। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া একজন নারী কিভাবে সেখানে তার দিন পার করেছে সেটাই আমি বইতে তুলে এনেছি। দেশকে কখনো ভুলে যাইনি। প্রতিটি মুহুর্তে এই দেশকে বুকে ধারণ করেছি। বিলেতের পথে প্রান্তরে শুধু দেশের ছবিই দেখেছি। আশা করি বইটি সবার কাছে ভালো লাগবে।
এর আগে চার সতীর্থের বইয়ের ওপর চারজন গুণী ব্যক্তি আলোচনা করেন। সতীর্থ ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের বই ‘বেলা- অবেলার কথা’ এর ওপর আলোচনা করেন অধ্যাপক রুবাইয়াত ফেরদৌস। সতীর্থ নরেশ ভুঁইয়ার ‘আমার আমি’ বইয়ের ওপর আলোচনা করেন বিশিষ্ট কবি ও কলামিস্ট এরশাদ মজুমদার। সতীর্থ শামীম আজাদের ‘বংশবীজ’ বইয়ের ওপর আলোচনা করেন ড. তৌহিদ রেজা নূর। মহিউদ্দিন আহমেদ এর ‘এদেশে একদিন যুদ্ধ হয়েছিল’ এই বইয়ের ওপর আলোচনা করেন সতীর্থ ম. শফিকুল করিম সাবু।
সভাপতিত্ব করেন সতীর্থ ঊনসত্তরের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সচিব মিজানুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন সতীর্থ ঊনসত্তরের সদস্যবৃন্দ ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সঞ্চালনায় ছিলেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী আয়েশা হক শিমু।
এসি/ এআর