ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

এলিজি নেতার জন্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৩৮, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

(জননেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্মরণে)

যখন মাঠের মধ্যে নিত্য চলে নৃত্য অশুভের

আমার পতাকা ওড়ে ঘাতকের বাড়ি ও গাড়িতে

গোলাপের নাভিকুঞ্জে সুন্দরের মৈথুন কলায়

অন্ধকার কাঁধে নিয়ে দেও-দৈত্য দু’হাত বাড়ায়

অগ্নিদগ্ধ গণতন্ত্রে লাশ হয় আমার সতীর্থা

রাশেদার প্রিয় স্বামী কলেজের নিরীহ শিক্ষক

নব পরিণীতা অই মেয়েটির সুখের বাসরে

উঁচিয়ে সঙ্গীন হাতে ছুটে আসে বুলেটসন্ত্রাস

বিপন্ন মানুষ কাঁদে বুকে নিয়ে দীর্ঘ হাহাকার

প্লাবনে বন্যার জলে এক সাথে শিয়াল কুকুর 

আহা! পরস্পর মুখ চাটে পরম নির্ভরতায়

তখন দেখেছি তাঁকে কী নির্ভীক ইস্পাত কঠিন

দৃঢ়তায় হাল ধরে পাড়ি দিতে বিপন্ন সময়

কোন লোভ ঈর্ষা কিংবা কারো প্রতি চরম বিদ্বেষ

কখনো দেখেনি জাতি এই অতি প্রচারবিমুখ

কিছুটা নিঃসঙ্গ, অনেকটা ঘরকোনো স্বভাবের

স্বপক্ষ বা প্রতিপক্ষ সকলের কাছে খুব প্রিয়

নির্মোহ সরলমনা এমন সোনার মানুষটির

সেই বহু দিন ধরে প্রতীক্ষিত মহাপ্রয়াণের

দুঃসংবাদ যখন পেলাম মুহূর্তের মধ্যে আমি

ক্রমশ পাথর হয়ে যাই; মনে পড়ে বহু স্মৃতি:  

প্রকৃত মানবগুণে একজন রাজনীতিবিদ

কী করে যে আলোকিত জীবনের পোশাক পরেন

কখনো তা কাছে গিয়ে কখনও বা দূর থেকে দেখে

রীতিমত অবাক হয়েছি; বুঝতে পারি রাজনীতি

মানবজন্মকে দেয় এমন মহিমা যার জন্যে

সকলেই নয়- কেউ কেউ যারা জন্মগতভাবে

বাঁচেন অন্যের জন্য, যাদের নিজের কিছু নেই;

 

দেশ ও দশের জন্য নিজেদের সবটুকু যারা

এমন কী নিজের প্রাণটাও হাসতে হাসতে নির্দ্বিধায়

পারেন বিলিয়ে দিতে অকাতরে- তেমন শহীদ

গর্বিত পিতার একজন পুত্র সৈয়দ আশরাফ

কর্কট রোগের কী দুঃসহ যন্ত্রণাকে উপেক্ষায়

পাশে ঠেলে রেখে দেশটাকে ভালোবেসে পিতাদের

অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার ব্রত নিয়ে

নিরন্তর লড়াই করেন - তা জাতি কী করে ভুলবে !

 

হ্যাঁ, আমি পাথর হয়ে কারও বুকে আঘাত দেবো না:

মনে ঈর্ষা কিংবা চোখে বিদ্বেষের আগুন জ্বালিয়ে

কারও প্রতি অভিমানে রাগ করে নির্ঘুম প্রহর

কাটাবো নির্মল চিত্তে স্বরচিত সজল পয়ারে

না, আমি তেমন কোনো কবি নই, যার নামে

বসন্তে পাতার নিচে গাইবে গান বিরহী কোকিল

আমি অতি তুচ্ছ এক নাগরিক দুঃখিনী দেশের,

যে দেশে পিতার রক্তে ভেসে যায় সন্তানের বুক:

সন্তানের কান্না শোক জমে জমে পাথর হয়েছে,

যে পাথরে নির্জনতা শুয়ে নাচে মৃত্যুর নেশায়

নিজেকে জাগাতে আমি সে পাথরে প্রবল আক্রোশে

হাতুড়ি চালাবো বলে যেইমাত্র সিদ্ধান্ত নিলাম

অমনি পেছন থেকে কে যেন আমাকে কাছে ডাকে

অদৃশ্য দু’হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,

আসলে জীবন বলে কিছু নেই, দু’দিনের মায়া

খুচরো পয়সার মতো দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাবে;

মৃত্যুই চূড়ান্ত সত্য; তারপরও এও ধ্রুব জানি

জীবন ফুরিয়ে গেলে শোনা যায় অন্য এক গান,

যে গানে নতুন সত্যে জন্ম নেয় আরেক জীবন।

লেখক : সাবেক সচিব।  

এসি 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি