বিচিত্র কয়েদখানা
প্রকাশিত : ১৪:৩৭, ১৫ আগস্ট ২০২১ | আপডেট: ১৪:৩৮, ১৫ আগস্ট ২০২১
আমাকে আর কোনদিন হিজলতলে নিলেনা কেন?
কেন? কেন নিলেনা?
আমার সাধের শালতিটা বেঁচে আছে তো?
সে কি শতদলজলে আর্দ্র নি:শ্বাস ফেলে ফেলে এ
যুগলকে এখনও খুঁজে ফেরে?
আহারে! চুলের সিক্ত ডগায় কতোকাল হয়ে গেলো
গোলাপরঙা শাপলা ফোটেনা!
আমার দিঘল কালো সরোবর কেমন আছে গো?
দয়া করে মিথ্যে বোলোনা!
যদিও তোমাতে আর আগের মতো আস্থা রাখিনা!
স্রেফ এক যন্ত্রমানব ছাড়া কিছু নও যে তুমি!
হ্যাঁ যন্ত্রমানব!
তোমার শরীরে মানবীয় রক্তমাংসের সেই গন্ধ আর
কই!
কথা দিয়েছিলে, তুমি আমার কৃশাঙ্গী সরোবরের
কৃষ্ণজল, প্রস্ফুটিত শতদল, শালতি নৌকা, হিজলের
থোকা থোকা মঞ্জরি গয়না কোনদিনও হারিয়ে যেতে
দেবেনা!
কথা কি রাখতে পেরেছো?
বলো? বলো?
সপ্তাহে অন্তত একটা করে সোনারঙা সকাল দেবে
বলেছিলে!
অলস একটা করে দুপুর!
আড়মোড়া ভাঙা একটা করে আনমনা বিকেল!
গোধূলিলগন, ঝিঁঝিসন্ধ্যেবেলা আর শশীতারকাময়
রাত্রি দেবে বলেছিলে!
বলেছিলে তো?
হ্যাঁ, বলেছিলে!
নোনা মেঘের পাপড়ি ছিটানো পথে পথে আমার সেই
শালতি নৌকা তো আর পাইনা!
বাঁশের সাঁকোটা কাঁপছে উড়ালসেতুর কঙ্কাল ধরে!
তোমার মহাকাশযানের যন্ত্রমানবী হতে আর আমি
চাইনা!
আমার শেকড়বাকল, শাখাপ্রশাখা, আমার পঞ্চপ্রহর,
আমার সব.. সব কিছু গিলে খেয়েছে
তোমার পুঁজিবাদী ভুবনের বিচিত্র কয়েদখানা!