১৯৭১-অজানা গণহত্যা
প্রকাশিত : ২০:৫২, ৯ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ২০:৫৬, ৯ মার্চ ২০২২
সময়টা-১৯৭১ সালের ২০ জুন, বাংলায় ৫ জৈষ্ঠ ১৩৭৮, ভোর আনুমানিক ৫টা। সাভারের ইছরকান্দি গ্রাম। শুনসান নিরবতায় গ্রামের অনেকে ঘুমে আবার কেউ কেউ বাড়ি বা মাঠের কাজে। ঠিক সেই সময় পাকবাহিনী আচমকা হানা দেয়।
গ্রামের অসহায় নিরীহ মানুষগুলো কিছু বুঝতে না বুঝতেই পাকবাহিনীর মারনাস্ত্রের মুখোমুখি হয়। কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হলেও অনেকে সেদিন পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। তারপরের ঘটনা নদী তীরবর্তী গ্রামটি সেদিন রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল, কয়েক ঘন্টার সেই আচমকা থাবায় প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় অর্ধশত নিরীহ অসহায় মানুষ। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও সেই ইতিহাস কেউ জানতে পারেনি। পাকবাহিনীর সেই বর্ববরতা, নিষ্ঠুরতা এবং নির্মমতা নিয়ে ১৯৭১-অজনা গণহত্যা ।
স্বাধীনতার এত বছর পরও পাকবাহিনীর এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞ কেন অজানা থাকল? এমন প্রশ্ন গ্রামের অনেকের মত আমারও। উত্তরটা ছিল-হত্যাযজ্ঞের শিকার পরিবার সদস্যদের দেশ ছেড়ে যাওয়া এবং শিক্ষিত-সচেতন মানুষের অভাব।
নির্মম সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে সত্যতা যাচাই করা যেমন কঠিন ছিল। তেমনি স্বাক্ষীদের খুঁজে বের করা ছিল দুঃসাধ্য। তার উপর এত বছর পরও ভয়ে মুখ খুলতে না চাওয়া। যা দু’একজনকে পাওয়া গেছে তাদের অনেকে কোন ঝামেলায় পড়বেননা এমন গ্যারান্টি চেয়েছেন। এমন এক পরিস্থিতিতে স্থানীয় ইছর গ্রামের তরুণ তারেক ইকবাল, সোহেল দেওয়ান, শেখ হান্নান, দিপু কুমার পাল সহযোগিতায় অনুসন্ধানে নামেন চ্যানেল ২৪ এর অনুসন্ধানী সাংবাদিক জি এম ফয়সাল আলম।
দীর্ঘ অনুসন্ধানে তিনি সেই অজানা গণহত্যার আদ্যোপান্ত তুলে আনেন। যেটি নিয়ে চ্যানেল ২৪ এ একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। সেই প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে তিনি ইতিমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান স্মৃতি পদক পেয়েছেন।
লেখক ফয়সাল আলম জানিয়েছেন, সেই অনুসন্ধানকে কেন্দ্র করেই তিনি এই বইটি লিখেছেন। যেখানে পাকবাহিনীর নির্মমতা এবং অজানা গণহত্যার শিকার পরিবারগুলোকে খুঁজে বের করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭১ নিয়ে যারা গবেষণা করেন তাদের জন্য বইটি দলীল হিসাবে কাজ করবে বলে লেখক বিশ্বাস করেন।
বাংলা এবং ইংরেজী ভার্সনে লেখা বইটি প্রকাশ করছে অন্বেষা প্রকাশন। মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা।
এসি