বইমেলায় ‘স্ফটিক অন্ধকার’
প্রকাশিত : ১২:৩৩, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৫১, ৪ মার্চ ২০১৮
এবারের একুশের গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে আশরাফুল আযম খান-এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘স্ফটিক অন্ধকার’। ধ্রুব এষের আঁকা নান্দনিক প্রচ্ছদসমৃদ্ধ এ গ্রন্থটি পাওয়া যাচ্ছে গ্রন্থমেলার আবিষ্কার প্রকাশনীর ৫৯০-৫৯১ নম্বর স্টলে।
১৫০ টাকা মূল্যের চৌষট্টি পৃষ্ঠার এ কাব্যগ্রন্থটিতে বিচিত্র স্বাদের পঞ্চাশটি কবিতা স্থান পেয়েছে। গ্রন্থটির অধিকাংশ কবিতা প্রেমবিষয়ক। নর-নারীর চিরায়ত প্রেম-আকাঙ্খাকে আধুনিক নানা অনুষঙ্গে কবি ব্যক্তিক অনুভবের বর্ণিল রঙে অসামান্য দক্ষতায় রূপায়িত করেছেন গ্রন্থটিতে। প্রেমের কবিতাগুলোতে নিটোল প্রেমের অনুভূতিই মুখ্য।
এছাড়াও গ্রন্থটিতে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নির্যাতন, সামাজিক বৈষম্য, ধর্মীয় ক‚পমণ্ডুকতা, পরিবেশচেতনার সমকালের নানা প্রসঙ্গ অসামান্য শিল্পদক্ষতায় প্রকাশিত হয়েছে আঙ্গিকগত বৈচিত্র্যে। গ্রন্থটির বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে দুটি অসাধারণ কবিতা কবির দেশপ্রেম ও প্রগতিচেতনার প্রাতিস্বিক পরিচয়কে ধারণ করে রয়েছে।
চিত্রকল্প নির্মিতি, ভাষার সহজ-সরল মাধুর্য্য, দৃশ্যময় শব্দপ্রয়োগ এবং আঙ্গিক-প্রকৌশলে এ কবির কবিতা সকল শ্রেণির পাঠকের জন্য বোধগম্য। রয়েছে প্রতীক, কূটভাষের উপস্থিতিও। বিষয়চেতনা ও আঙ্গিক নির্মাণে তিনি আধুনিকতার অনুসারী হয়েও ভাষা ও প্রকাশগুণে স্বতন্ত্র বৈশিষ্টে উজ্বল। স্বভাবতই তার কবিতা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠককে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে।
গ্রন্থটির পশ্চাৎ-প্রচ্ছদে কবি ও তার কাব্য পরিচয়ে বলা হয়েছে-‘আশরাফুল আযম খান। শৈশব কেটেছে গ্রামে। গ্রামে তখনও বিশ্বায়ন আর মুক্ত বাজার অর্থনীতির বাতাস লাগেনি। গ্রামের প্রকৃতির রূপময়তা আর সারল্যভরা প্রতিবেশ ছোটবেলায় তাঁর জীবনে বুনে দিয়েছিল শুভচেতনার বীজ। এ বীজ যখন অঙ্কুরোদগম হয়ে পল্লবিত হতে শুরু করে তখনই কালের প্রবহমান জীবন স্রোত তাকে টেনে এনেছে আরেক চরাচরে, নাগরিক প্রতিবেশে। যেখানে রয়েছে জীবনের জঙ্গমতা, কট‚গন্ধ, স্বপ্নের ফসিল, মৃত ঝিনুকের চূর্ণি, হারিয়ে ফেলা সময়ের পদচিহ্ন, ভালোবাসার ভস্ম, পাণ্ডুর চোখের জল এবং জীবনের ক্লেদ আর কপট সময়। কবির চৈতন্যজুড়ে এই দুই বিপরীত প্রতিবেশের দ্বান্দ্বিক অস্তিত্ব। নির্সগপ্রীতি, প্রকৃতি চেতনা, দেশপ্রেম, জগৎ-জীবনবীক্ষা, মানবিক প্রেমের বিরহ-মিলন-মধুরতা অসামান্য শিল্পভাষ্যে কবিতায় রূপায়িত হয়েছে। কবিতার শিল্প-প্রকৌশলে বিশেষত শব্দনির্বাচন, চিত্রকল্প সৃষ্টি, আঙ্গিক নির্মিতিতে তিনি স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ পাস করেন কবি আশরাফুল আযম। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। অনিয়মিত হলেও জাতীয় দৈনিকেও প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেন। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক টক-শো এর উপস্থাপনার সাথেও জড়িত আছেন তিনি।
বিগত শতকের নব্বই দশকের শুরুতে কবিতা লেখার হাতেখড়ি। কলেজ জীবনের প্রারম্ভেই একের পর এক কবিতা প্রকাশিত হতে থাকে চালচিত্র, প্রাবৃট, প্রসঙ্গ, লোকায়তসহ নানা সাহিত্য পত্রিকায়। সে সময়ে লিখতেন আশরাফ সেবু নামে।
//এস এইচ এস// এআর