সোনিয়া স্নিগ্ধার কবিতা
প্রকাশিত : ১৯:৩৭, ২৫ এপ্রিল ২০২০
লড়ছে মানুষ
যুদ্ধবাজ নেতাদের মগজে বইছে শান্তির সুবাতাস
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল নয়,
বিশ্বকে বাঁচাতে লড়ছে ক্ষমতাসীনরা।
মরণাস্ত্রের টাকায় অসহায়ের জন্য কেনা হচ্ছে খাদ্য
মানুষকে বাঁচাতে, মানুষই লড়ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও, ট্রায়াল ভ্যাকসিন নিচ্ছে হাসিমুখে
একসাথে ঘরে থাকছে, একসাথে লড়ছে।
মানুষ দাঁড়িয়েছে মানুষের জন্য, প্রাণীর জন্য
ব্যক্তিগত ভান্ডার উজার করছে সম্মিলিত প্রয়োজনে।
কিছু লুটেরা কিট খড়কুটো চুরি করে
ইতিহাসের কালো অধ্যায়ে জায়গা করে নিচ্ছে
নিশ্চিত জানি করোনার ক্রান্তিকাল কেটে গেলে
তারা নিক্ষিপ্ত হবে আস্তাকুড়ে!
পরিবর্তন
বিস্তীর্ণ বেলাভূমিতে মানুষের পদচারণা নেই
নেই উচ্ছল ঢেউয়ের তালে উন্মাতাল নৃত্য।
লাল কাঁকড়ার আবাসে মানুষের বিচরণ নেই
জনারণ্যে ঢাকা সৈকত এখন বিরান শ্মশান।
প্রাণের সঞ্চার করা প্রবাল দ্বীপে, নেই হৃদ স্পন্দন
মহামারি মানুষকে আবদ্ধ করেছে খাঁচায়।
প্রকৃতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হচ্ছে
হু হু করে কমছে কার্বন ডাই অক্সাইড
বন্য প্রাণীরা বহুদিন পর নিজস্ব আবাস ছেড়ে
বেরিয়ে আসছে নির্দিধায় রাজপথে!
তবে ক্ষুধার্ত কুকুরের একটানা আর্তনাদ
মাঝে মাঝেই ঝনঝন শব্দে ভেঙে দিচ্ছে রাত্রির নিরবতা।
সচেতন বৃত্ত ছেড়ে মানুষ বেরিয়ে পড়ছে পথে
অনাহারির মুখে তুলে দিচ্ছে একমুঠো অন্ন,
আর অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ছে মানবিক গল্প।
এরকম ভালোবাসায় যদি ভরে উঠে মুখবন্ধ
তবে যাবার আগে জেনে যাব
মানুষ বাঁচে মানুষের জন্য, মানুষ বাঁচে প্রাণের জন্য।
আমার বাবা
ভীষণ আমুদে মানুষ ছিলেন বাবা
উৎসব,পার্বন উদযাপনের ঘটা ছিলো তার।
বৈশাখের প্রথম দিন, মনে হতো ঈদের মত
দম ফেলার ফুরসত থাকত না কারো
সারা বাড়ি জুড়ে ব্যস্ততা,
রান্নাবান্না অতিথি আপ্যায়নে কাটতো মায়ের সারাবেলা।
সকাল সকাল হাঁক ডাক, ফলের ঝুড়ি
নতুন জামা,কাঁচের চুড়ি, মেলায় কেনা পুতুল
কি উচ্ছ্বল দিন ছিলো আমাদের!
এখন আর নতুন কাপড়ের গন্ধে শুরু হয় না
আমাদের পহেলা বৈশাখ।
নেই কোন হৈচৈ কোলাহল, আতিথেয়তার অবকাশ।
বড় বেশি উৎসব প্রিয় মানুষটি হারিয়ে গেছে
এমনই এক বৈশাখে, সব রং ফিকে করে।