ঢাকা, রবিবার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাংবাদিক-রাজনীতিক বেবী মওদুদের দশম প্রয়াণ দিবস আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৭, ২৫ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ০৮:৫৯, ২৫ জুলাই ২০২৪

মা-মাতৃভূমি, রাজনীতি-সংস্কৃতিকেই মূখ্য জ্ঞান করতেন বেবী মওদুদ। নির্যাতিত জনমানুষকে দিশা দেখিয়েছেন প্রগতিশীল রাজনীতির এই কান্ডারী। যার কেন্দ্রে ছিল কেবলই মানুষ। সাহিত্যিক-সাংবাদিক ও রাজনীতিক বেবী মওদুদের দশম প্রয়াণ দিবস আজ।

বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের সময় থেকেই বেবী মওদুদের মননশীল রাজনীতির উন্মেষ। সংগঠক হিসাবে ভূমিকা রেখেছেন বাংলাদেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন-সংগ্রামে। পেশায় সাংবাদিক আর মন-মননে সাহিত্যিক বেবী মওদুদ ছিলেন বঞ্চিত মানুষের ভরসাস্থল। 

দেশভাগের পর জন্ম নেয়া মানবঘনিষ্ট, স্বাধীনচেতা মানবিক ব্যক্তিত্ব বেবী মওদুদ। যার লেখনি, নেতৃত্ব আর প্রজ্ঞা বাতিঘর হয়ে আছে আজও। 

অনাড়ম্বর যাপন, সত্য বচন তাকে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। ক্ষমতাবৃত্তের কেন্দ্রে থেকেও লোভ আর স্বার্থের ঊর্ধ্বে বিচরণ করতেন বিরলপ্রজ এই নারী নেত্রী। 

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আর একাত্তরের ঘাতক-দালালদের বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার। 

২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহচর। পরবর্তীতে সংসদ সদস্য হয়েও মানুষের কণ্ঠস্বর হিসাবেই বিবেচিত ছিলেন।  

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালের ২৫ জুলাই ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে রবিউল হাসান অভী, শফিউল হাসান দীপ্তসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে রবিউল হাসান অভী একুশে টেলিভিশনের এমডি ও সিইও।

বেবী মওদুদ ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্সসহ ১৯৭১ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় তিনি প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। নারীর অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রামে একনিষ্ঠ, সমাজসেবায় অগ্রণী, সাহিত্য সাধনায় নিবেদিতপ্রাণ কিংবা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা সত্ত্বেও বেবী মওদুদ ছিলেন মূলত পেশাদার সাংবাদিক।

মুক্তিযুদ্ধের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন বেবী মওদুদ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার আগে ১৯৬৭-৬৮ সাল পর্যন্ত রোকেয়া হলের ছাত্রী সংসদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

১৯৬৭ সাল থেকে পেশাগত জীবনে সাংবাদিকতায় জড়িত বেবী মওদুদ দৈনিক সংবাদ, সাপ্তাহিক ললনা, দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক মুক্তকণ্ঠে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। বিবিসির বাংলা বিভাগের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) বাংলা বিভাগ গড়ে তোলার প্রসঙ্গে প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি। নতুন কলেবরে যখন সাপ্তাহিক বিচিত্রা প্রকাশিত হয় তখন তিনি এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত অনলাইন নিউজপোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স সম্পাদক ছিলেন বেবী মওদুদ।

২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংসদ সদস্য মনোনীত হোন। বাংলাদেশের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং লাইব্রেরি কমিটির সদস্য হিসেবেও তিনি কার্যভার পালন করেন।

তাঁর কর্মের মাধ্যমেই তিনি উত্তর প্রজন্মের মধ্যে আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন- এমনই মত সবার। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি