পুনরায় ডিইউজের ভোটগ্রহণের দাবি ১১ সাংবাদিক নেতার
প্রকাশিত : ২২:০৭, ১ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৩৫, ৪ মার্চ ২০১৮
ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ১১ জন শীর্ষ সাংবাদিক নেতা। তারা শিগগিরই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তফশিল ঘোষণার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক যুক্ত বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা নির্বাচন ঘিরে দেশের শীর্ষ সাংবাদিক সংগঠন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নকে গভীরতম সংকট থেকে রক্ষার আহ্বান জানান।
বিবৃতিদাতারা হলেন- বিএফইউজের সাবেক সহ-সভাপতি ও সভাপতি প্রার্থী জাফর ওয়াজেদ, কুদ্দুস আফ্রাদ ও আতাউর রহমান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাজ্জাদ আলম খান তপু, খায়রুজ্জামান কামাল, সেবিকা রানী, গাজী জহিরুল ইসলাম, এম এ কুদ্দুস, অমিয় ঘটক পুলক, রওশন ঝুনু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী খায়রুল আলম।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিইউজে নজিরবিহীন জাল ভোট প্রদান, হঠাৎ করে দুই ঘণ্টা ভোটের গতি কমিয়ে আনা, এক ঘণ্টা ভোটের সময় বাড়িয়ে দেওয়ার মতো তুঘলকি সিদ্ধান্তর মাধ্যমে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির তৈরি করা হয়। জাল ভোট দিতে আসা ৩০ জনকে হাতে নাতে ধরিয়ে নির্বাচন কমিশনের হাতে সোপর্দ করা হলেও তাদের রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দেন কমিশনের সদস্যরা।
`এদিকে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য তিন শতাধিক পেশাদার সাংবাদিক লাইনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও ভোটগ্রহণ অধিক বিলম্বের কারণে অফিসের সময় হওয়ায় তারা চলে যেতে বাধ্য হন এবং ভোট দিতে পারেননি। নির্বাচন চলাকালীন বিভিন্ন প্রার্থীরা কমিশনের সদস্য বরাবর মৌখিভাবে অভিযোগ দেওয়া হলেও সেগুলো আমলে নেননি।’
তারা বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টায় বিক্ষুব্ধ ডিইউজে সদস্যদের প্রতিবাদের মুখে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ফলাফল ঘোষণা না করে কেন্দ্র ত্যাগ করে। যে নির্বাচনের ফল প্রচার করা হচ্ছে তা নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফল নয়। রাত সাড়ে ৮টায় কতিপয় ব্যক্তির ফেসবুকে ফলাফল প্রচার করতে দেখা যায় যা বস্তুনিষ্ট নয়। আর এই ভুয়া নির্বাচনের ফল নিয়ে কয়কটি স্বনামধন্য গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
তারা আরো বলেন, `এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত ও বিস্মিত। এই পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠন এবং ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার সাংবাদিকদের রুটি-রুজি ও অধিকার আদায়ের এই সংগঠনটির অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে।’
প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল ৮টা থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা নির্ধারিত সময়ের থেকে এক ঘণ্টা বেশি সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়। রাত ৮টার দিকে ভোট গণনা শেষ হওয়ার পর থেকেই আপত্তি তুলতে থাকেন হেরে যাওয়া বিভিন্ন প্রার্থী। ভোট রিডার মেশিনে ত্রুটির পাশাপাশি জাল ভোটের অভিযোগও তোলেন তারা। পরে রাত ১০টার দিকে ফল ঘোষণা করতে গেলে তোপের মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন। এরপর রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু তাহের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করতে গেলে ফল ঘোষণার মঞ্চ ও সামনে প্রার্থীদের বসার চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশন কিছু প্রার্থীর ফলাফল ঘোষণা করলেও কারো ভোট সংখ্যা উল্লেখ করেনি। এসময় কয়েকজন ‘নির্বাচন মানি না’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
ফলাফল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশনার প্রধান আবু তাহের বলেন, জালভোট দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়। তবে অভিযোগ নির্বাহী কমিটির কাছে জানানো হবে। এরপরেও সমাধান না হলে আদালতের দরজা খোলা আছে।
এসএইচ/