ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আলমগীর ভাই আছেন সবার মাঝে

প্রকাশিত : ২২:৫৮, ২২ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ২২:৫৯, ২২ মার্চ ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

স্বজন হারালে তো কাঁদে সবাই। এমন হাউ মাউ করে কান্না চিৎকার করে কান্না। বুক ফেটে হৃৎপিণ্ড বের হয়ে আসবে এমন কান্না কাঁদে সবাই স্বজনের জন্য। কিন্তু যে নয় স্বজন, যার সাথে নেই রক্ত আইন বা সামাজিক বন্ধন তার জন্য কাঁদে কজন। রোদ বৃষ্টি কাজ সব ফেলে হাজারও মানুষের ছুটে আসা, এমন কান্না। হাজারো মানুষ বুঝে স্বজন হয় কারো?!!

হয়তো, হলো তো। শাহ আলমগীর হাজারো মানুষের স্বজন। যখন যেখানে গিয়েছেন তার আপন হয়নি এমন কে আছে। এক হাসিমুখ মুহূর্তে কাছে টানতো সবাইকে। এক মুহূর্তে যে কেউ বুঝে যেতো মানুষটি তার আনন্দের না হোক বিপদের সঙ্গী নিশ্চিত। এই যে এই নিশ্চয়তা দেয়া তাই তাকে বড় করিয়েছিলো, বানিয়েছিলো নেতা।

এই দেশে নেতা মানে যখন কেবল নিজের স্বার্থ বা ভারী পকেট, তখন শাহ আলমগীর দেখিয়েছিলেন জানিয়েছিলেন নেতা হতে হয় পরের স্বার্থে। সেই স্বার্থ বিকোয়না কোনো দামে ।

অন্যায় যা, যা কিছু সাংবাদিকদের ফেলেছে বিপদে তিনি ছুটেছেন সমাধানে বসেছেন রাস্তায়। ছেড়েছেন আরামের চাকরি নিশ্চিত জীবন বারবার। পত্রিকা হয়ে টেলিভিশন টেলিভিশন থেকে সাংবাদিক বানানোর কারখানা যেখানে গেছেন সফল তিনি। প্রতিটি মানুষ তার আপন। প্রতিটি মানুষ ভাবতো শাহ আলমগীর ভালোবাসে তাকেই সবচে বেশি।

ভালোবাসা নিয়ে এমন কাড়াকাড়ি কজনার ভাগ্যে জোটে। শহরেরে ইট কাঠের অফিস তাকে টেনেছে কম। যতটা টেনেছিলো তাকে সবুজ গ্রাম আর জেলা শহর। মাটি ফুরে উঠে আসুক তুমুল সব সাংবাদিক যারা বুনিয়াদ হবে এই দেশের সাংবাদিকতার। তাদের বুনিয়াদী শিক্ষায় ছুটেছেন তিনি সারা দেশ, সারা বাংলায়।
তার একাগ্রতা নিষ্ঠা তার দায়িত্ব পাকা করেছে বারবার। এক মানুষ তিনবার হয়েছেন পিআইবির অভিভাবক। আর কবে কোথায়?

এই দেশের সাংবাদিকরা ভীত গড়তে গড়তে নিজের শরীরে ভীতে কবে ধরেছে ঘিন পোকা জানান নি তিনি কিছু। সেই ঘুন খেয়েছে তার শরীর। খেয়ে যখন শেষ করেছে সব, সারা পড়েছে সবার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যমের পুরো জগত দুহাত তুলে দোয়া আর মোনাজাত। যে বিশ্বাস করে না স্রষ্টা সেও তুলেছেন হাত। কিন্তু কারো মিলেনি আর সেই হাসিমুখ।

যে সৃষ্টিকর্তার সবচে প্রিয় তার নাকি আর প্রয়োজন হয়না এই জগত। সব ভালো মানুষ সব শ্রেষ্ঠ মানব স্রষ্টার কাছে নাকি চলে যান দ্রুত। কাজের মাঝে থেকে সকলের ভালোবাসা নিয়ে স্রষ্টার কাছে যাত্রার সৌভাগ্য হয় কজনার। কিছু বুঝে উঠার আগে তিনি গেছেন। তিনি ফিরবেন বলে টেবিলের ফাইলগুলো জমে আছে । দুরের জেলার ১৬ জন সাংবাদিক বসে আছেন তার প্রশিক্ষণের আশায়। কত জনের ছায়া তিনি । হঠাৎ তুমুল ঝাঝালো তাপে অন্তর পুরো যাওয়ার কষ্টে সবাই টের পেয়েছে শাহ আলমগীর নেই।

নেই মানে তার শরীর। তিনি আছেন সবার ভালোবাোয়, সবার শিক্ষার সবার মহত্বে। তিনি আছেন আফসোস করে বলায় ‘ইস যদি আলমগীর ভাই থাকতেন, ইস যদি তিনি থাকতেন?

তিনি আছেন দীর্ঘ শ্বাসে! তিনি আছেন! তিনি আছেন!!

লেখক: একাত্তর টিভিতে কর্মরত।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি