একুশের কণ্ঠস্বর রুদ্ধের ১৮ বছর (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১০:১১, ২৯ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ১০:২৮, ২৯ আগস্ট ২০২০
২৯শে আগস্ট ২০০২। গণমাধ্যমের ইতিহাসে এক কালো দিন। এদিন চারদলীয় জোট সরকার আইনি মারপ্যাঁচ ও রাজনৈতিক কূটচালে বন্ধ করে দিয়েছিল দেশের প্রথম বেসরকারি টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল- একুশে টেলিভিশনের কণ্ঠস্বর। নানা বাধা পেরিয়ে আদালতের রায়ে ২০০৫ সালে একুশের জয় হলেও ফিরে পায়নি টেরিস্ট্রিরিয়াল সুবিধা। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ থেকে আবারও যাত্রা শুরু করে একুশ।
বিশিষ্টজনরা বলছেন- মাটি-মানুষ ও মুক্তিযুদ্ধের, পক্ষে, সত্য ও সুন্দর এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বির্ণিমানে অবিচল থাকবে একুশ টেলিভিশন।
২০০০ সালের ১৪ই এপ্রিল। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দিন। সত্য-সুন্দর ও ন্যায়ের অঙ্গীকারে পথ চলা শুরু করে দেশের প্রথম বেসরকারি টেরিস্ট্রিরিয়াল টেলিভিশন চ্যানেল ‘একুশে’।
নতুন মাত্রা যোগ হয় টেলিভিশন সংবাদে। অনুষ্ঠানে বৈচিত্র, নিত্য-নতুন তথ্য প্রবাহ আর উপস্থাপনায় একুশে হয়ে উঠে গণমাধ্যমের পথ-প্রদর্শক।
মুক্তিযুদ্ধের জয়গান, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বলিষ্ঠ দাবি, ধর্মান্ধতা আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার একুশের সংবাদ আর অনুষ্ঠানমালা সিক্ত হয় মানুষের প্রগাঢ় ভালোবাসায়। । ১৮ বছর আগে, এই দিনে পরিবর্তনের অঙ্গীকারে আবদ্ধ একুশের কণ্ঠরোধ করা হয়।
মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা আর দীর্ঘ আইনি লড়াই, পেরিয়ে একুশে ফিরে আসে দর্শকদের কাছে। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ থেকে আবারও যাত্রা শুরু করে একুশ। আদালতের রায় আসে একুশের সম্প্রচারের পক্ষে, তবে টেরিস্ট্রিয়ালে নয়, স্যাটেলাইটে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আবহমান বাংলার ঐতিহ্য আর অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্ফুরণে ভীত হয়ে তৎকালীন সরকার একুশের কণ্ঠ রুদ্ধ করে।
এ বিষয়ে সিনিয়র সাংবাদিক হারুন হাবিব বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলার, চিরায়িত বাংলার যে রুপ, যে আবেদন সেটাকে যখন ইটিভি সম্প্রচার করতে থাকে, সেটাকেই আঘাত করতে চায় সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি।
২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। তারা প্রগতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বন্ধ করেছিল একুশে টেলিভিশন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একুশের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, যেহেতু এই চেতনা নিয়ে একুশে টেলিভিশন এগিয়ে যাচ্ছে, আর সরকার হচ্ছে বিএনপি-জামাত জোট সরকার যেখানে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি মন্ত্রিসভায় অবস্থান করছে অতএব আমরা স্বাভাবিকভাবে বুঝতে পারি, যে নানা ধরনের কূটকৌশলের মাধ্যমে এই সম্প্রচারকেন্দ্রটি বন্ধ করার পাঁয়তারা করা হলো, বন্ধ করে দেয়া হলো।
ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ আর অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে একুশ চলছে উল্লেখ করে টেলিভিশনটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পীযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, একুশে টেলিভিশন বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে, বাংলা ভাষার মর্যাদার পক্ষে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে, অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে এবং বাংলা আবহমান যে সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতির পরমপরায় একুশে টেলিভিশন সম্পৃত থাকে শতভাগ, এর বাইরে তো যাওয়ার কথা নয়।
সত্য উচ্চারণে দ্বীধাহীন একুশ- কারণ একুশ মানে তো মাথা নত না করা।
এমবি//