সাংবাদিকদের ঝুঁকি মোকাবেলায় কাজ করবে বিজেসি
প্রকাশিত : ১৭:১১, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১১:৩৬, ২২ মার্চ ২০১৯
কল্যাণমূলক সাংবাদিকতা ও ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করবে সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র-বিজেসি। দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখবে বলে মনে করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সম্প্রচার সংবাদিক কেন্দ্র- বিজেসি`র আনুষ্ঠানিক যাত্রা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সম্প্রচার সম্মলনের উদ্বোধক হিসেবে স্পিকার এ আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ টেলিভিশন সংবাদ কর্মীদের ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার ঘোষণা দেন। বলেন, শিগগিরই সম্প্রচার আইন হবে। এর মাধ্যমে সুরক্ষা পাবে সম্প্রচার মাধ্যমের সংবাদকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম সম্প্রচার মাধ্যমকে নীতিমালার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে ঝুঁকি কমবে সম্প্রচার সংবাদকর্মীদের।
প্রায় ১১`শ সদস্যের সংস্থা সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র-বিজেসি`র সম্প্রচার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে। বিজেসি`র চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধন পর্বে সাংগঠনিক প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ। এরপর `সম্প্রচার শিল্প : একটি সম্ভাবনার সংকট?` শীর্ষক আলোচনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে উঠে আসে সম্প্রচার মাধ্যমের সম্ভাবনা, সংকট ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার নানা দিক।
এ আলোচনায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বেসরকারি টিভির যাত্রা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এখন দেশে ৪৪টি চ্যানেলের অনুমোদন রযেছে। ৩০টি সম্প্রচারে আছে। এরইমধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা দিতে বেশ কিছু আইন ও নীতিমালা হয়েছে। তবে সম্প্রচার আইন পাশের আগে সবার সঙ্গে আলোচনা করবে সরকার।
তিনি বলেন, ৯ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে নতুন কমিটি কাজ করছে। টেলিভিশনের জন্য আলাদা ওয়েজবোর্ড করা হবে। প্রতিটি টিভিতে বেতন-ভাতা যেন নিয়মিত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সবাইকে৷ অনেক প্রতিষ্ঠানে বেতন দেয়ার ক্ষেত্রে স্বদিচ্ছার অভাব আছে। আবার বিজ্ঞাপনের টাকা দিয়ে টিভি চ্যানেলগুলো পরিচালিত হলেও এক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন ঠিকমতো না পাওয়া এবং অনেক বিজ্ঞাপনের অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ সময় মন্ত্রী, দেশ গঠন ও সামাজিক অসঙ্গতিও তুলে ধরার জন্য সম্প্রচার মাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বিজ্ঞাপনের রেটের সাথে আপোস হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এটা নিয়ে সব মালিককে এক হতে হবে। বিজ্ঞাপনী সংস্থা টাকা পরিশোধ করলেও অনেক সময় তা সংবাদকর্মীদের কাছে পৌছায় না।
টিভি মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোর সহ-সভাপতি মোজাম্মেল বাবু বলেন, টেলিভিশনের লভ্যাংশের অন্তত ২৫ শতাংশ সব কর্মীদের দিতে হবে। দর্শকদের ফি প্রদানের আওতায় আনতে হবে।
পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর বলেন, সম্প্রচার গণমাধ্যম আইনের জটিলতা দূর কর টিভি সংবাদকর্মীদের দ্রুত ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনতে হবে।
নিউজ ২৪ টিভির সিইও নঈম নিজাম বলেন, আলাদা ওয়েজবোর্ড আজও করা যায়নি। এটা হতাশাজনক। নাগরিক টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক বলেন, আগামি ৫ বছরের জন্য নূন্যতম লাভ করে চ্যানেল টিকিয়ে রাখতে হবে৷ সবাইকে এক হতে হবে। কারন অনলাইনে বিকল্প প্ল্যাটফর্মের জায়গা শক্ত হচ্ছে।
জিটিভি ও সারাবাংলার প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, পে চ্যানেল হতে হবে। সরকারি বিজ্ঞাপনের জন্য কোনো টাকা-ভ্যাট নেয়া হয় না। বেসরকারি টিভিকে এর আওতায় আনতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন বলেন, সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের কর সরকার পায় না। মিডিয়া সিন্ডিকেট থাকতে পারে না। টাকা দিয়ে বলে দেয়া যাবে না যে এটা চালাতে হবে, ওটা চালানো যাবে না। আরো বক্তব্য রাখেন এমআরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুরসহ বিভিন্ন টিভি মালিক ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তা।
এসময় সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্রের চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক ও সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে, পে চ্যানেল করা, বিজ্ঞাপনের টাকা পরিশোধের সময়সীমা বেধে দেয়া, টিভিকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা।
উদ্বোধনী পর্বে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয় স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম, ফ্রেইড সোর্সিং লিমিটেডের সিইও এম মোবারক হোসেন তুষার ও শামসুল ইসলাম রনিকে।
এসি