সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আবারও সড়কে সাংবাদিকরা
প্রকাশিত : ১৮:০৫, ২২ জানুয়ারি ২০২০
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) এর দুই সদস্যকে পুলিশের মোটরসাইকেল চাপা ও পিষে ফেলার হুমকির এবং এক সদস্যকে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সাংবাদিকরা।
আজ মঙ্গলবার ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে সংঠনের নেতাকর্মী সদস্যসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা।
সম্প্রতি ২০ জানুয়ারি পরীবাগ এলাকায় বাংলা ট্রিবিউনের ক্রাইম রিপোর্টার শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আলোকিত বাংলাদেশের স্টাফ রিপোর্টার সাজ্জাদ মাহমুদ খানকে পুলিশের মোটরসাইকেল চাপা ও অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এর কয়েকদিন আগে বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট আসাদুজ্জামান শিমুলকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। এই দুই ঘটনার প্রতিবাদে সমাবেশটির আয়োজন করা হয়।
দুই সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, পুলিশের কাজ জনগণের সেবা করা। অথচ এক পুলিশ কর্মকর্তা উল্টোপথে এসে দুই সাংবাদিককে চাপা দেয়, প্রতিবাদ করলে তাকে গালমন্দ করে, মেরে চলে যায়, এই হল পুলিশের আচরণ। তাদের আচরণ দেখে আমি অবাক। তারওপর যে মোটরসাইকেল দিয়ে চাপা দিয়েছে সেটির নম্বর প্লেটও ভুয়া, এটা আরও বড় ধরণের ক্রাইম। আমরা এবিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এই ঘটনাটির জন্য একজনকে অ্যাসাইন করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা জানি স্বাধীনতার সময় রাজারবাগে প্রথম রাইফেল হাতে প্রতিরোধ গড়েছিল পুলিশ বাহিনী। অথচ কয়েকজন সদস্যের জন্য গোটা বাহিনীর গৌরব নষ্ট হচ্ছে, জনগণের কাছে তাদের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমি উর্ধতনদের আহ্বান জানাবো আপনারা এইসব সন্ত্রাসীদের মতো আচরণকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে যেন বের করে দেয়া হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশ পরিচালনা করেন ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু।
এসময় ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত কাওসার, অর্থ সম্পাদক আবু হেনা রাসেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হরলাল রায় সাগর, দফতর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজী, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সাইফ বাবলু, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহীন আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য রুদ্র মিজান, ক্র্যাবের সদস্য ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টার থেকে মোটরসাইকেলযোগে পান্থপথে কর্মস্থল বাংলা ট্রিবিউন অফিসে যাচ্ছিলেন শেখ জাহাঙ্গীর। তার সঙ্গে ছিলেন আলোকিত বাংলাদেশের সাজ্জাদ মাহমুদ। এ সময় পরিবাগের রাস্তার বিপরীত দিক থেকে আসা পুলিশের একটি বাইক ধাক্কা দেয়। একবার ধাক্কায় দেওয়ার পর আবারও ইচ্ছাকৃত জাহাঙ্গীরের পা বরাবর চাপা দেয়।
জাহাঙ্গীর ও সাজ্জাদ প্রতিবাদ করলে জাহাঙ্গীরকে লাথি মারেন, অকথ্য ভাষায় তাদের দুজনকে গালিগালাজ করেন। পরে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যান পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি। তার মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর হলো- ঢাকা মেট্রো হ-১২-৭৫০৫।
১৮ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ৮টার দিকে খিলগাঁও বিশ্বরোড এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির কাছে হামলার শিকার হন বাংলানিউজের সিনিয়র রিপোর্টার আসাদুজ্জামান শিমুল। ওই রাতে কালো একটি মাইক্রবাসে বন্ধুদের সাথে খিলগাঁওয়ের দিকে যাচ্ছিলেন শিমুল। এ সময় দ্রুতগতির একটি প্রাইভেটকার তাদের মাইক্রবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে দুই চালকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
এক পর্যায়ে বিষয়টি সুরাহার জন্য শিমুলরা মাইক্রোবাস থেকে নামলে প্রাইভেটকার চালকসহ বেশ কয়েকজন যুবক রড নিয়ে শিমুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে শিমুল অচেতন হয়ে পড়েন। পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় বিশ্রামে আছেন শিমুল। দুর্বৃত্তদের হামলায় শিমুলের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত ও শিরদাঁড়া আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
এসি