ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনার হাত ধরেই ইলেকট্রনিক সাংবাদিকতা শুরু: তথ্যমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩১, ৬ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ২৩:৪৪, ৬ মার্চ ২০২০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই দেশে ইলেকট্রনিক সাংবাদিকতার যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উত্থানে মূলধারার গণমাধ্যম হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র টিএসসি মিলনায়তনে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ২য় সম্মেলনের প্রথম সেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা তিনি এ কথা বলেন। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়েই ইলেকট্রনিক সাংবাদিকতার শুরু। ১৯৯৬ সালে লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে। এরপর ২০০৯ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন চ্যানেল ছিল ১০টি, এখন ৩২টি। অন্তত এক ডজন কমিউনিটি রেডিও এর লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে মূলধারার গণমাধ্যম এখন হুমকির মুখে। তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বেশিরভাগ বিজ্ঞাপন এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইনে চলে গেছে। এটা শুধু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট না, পুরো বিশ্বেই। যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের অনেক পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে। সার্কুলেশন কমে গেছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুব ভালো কিছু না। ইউরোপের এক জরিপে দেখা গেছে, সেখানকার ৮০ শতাংশ মানুষ মনে করে, সামাজিক যোগাযোগ সামাজিক অস্থিরতা তৈরির জন্য দায়ী। গণতন্ত্র ও ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য হুমকি এগুলো। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা এখন বিদেশি চ্যানেলে দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন বন্ধ করেছি। আগে চ্যানেলে সিরিয়াল ছিল না, আমরা শৃঙ্খলা এনেছি।

তবে টেলিভিশন সম্প্রচার খাতে ডিজিটাল বিপ্লব আনতে হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ ডিজিটাল হলেও এটা সত্য, টেলিভিশন সম্প্রচার ব্যবস্থা ডিজিটাল হয়নি। ক্যাবল অপারেটরদের সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করছি। গত ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকায় এমনটা করার কথা ছিল। কিন্তু করেনি। তাদের আবার সময় নির্ধারণ করে দেব। কাজ না হলে কঠোর হব। প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করব।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, সম্প্রচারমাধ্যমের পেশার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, অবশ্যই তাদের চাকরির সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করব খুব শিগগির গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য। আগামী সংসদ অধিবেশনে সেটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইন যখন চূড়ান্ত হবে, তখন গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির আইনগতভাবে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।

সম্প্রচার আইন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রচার আইন দেড় বছর আগে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয় এটির ভেটিংয়ের কাজ শুরু করেছে। আমরা আশা করছি, দ্রুত ভেটিং হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছে যাবে। আপনারা জানেন, সম্প্রচার নীতিমালা রয়েছে, এটি আইনে পরিণত হবে।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘একটি দেশের নির্ধারিত অবস্থানে অনেক উপাদান রয়েছে। আর্থিক ও সামাজিক খাত, সংস্কৃতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে এগিয়ে যায় দেশ। আমি বিশ্বাস করি আমার দেশের ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিড়িয়া সামাজিকভাবে অসাধারণ অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখছে। এদেশের সব ভালো কাজের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত। আমাদের অর্জনগুলো তারা এদেশের মানুষকে জানাচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশেও তারা তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। এ কারণে আমরা আমাদের আর্থিক, সামাজিক শিক্ষা খাতে সবক্ষেত্রে যতটা অর্জন করতে পেরেছি, এর রূপকার হচ্ছেন আপনারা।’

মিড়িয়া কর্মীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সব কাজের সঙ্গে আমি আছি। প্রধানমন্ত্রী আছেন। তথ্যমন্ত্রী বলে গেছেন, তিনি একটি আইন করছেন। সেই আইনসহ সব আইন, যা ভালো হবে আপনাদের জন্য, আমরা নিখুঁতভাবে সেই আইন প্রণয়ন করব। কিছুটা সময় লাগছে। কিন্তু ধরে নেন এই আইন আমরা করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সোচ্চার এ ব্যাপারে। তিনি চান এ শিল্পকে রক্ষা করতে হলে শুধু পারমিশন দিলে হবে না। ধারণ করতে হবে।’

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য মিডিয়ার স্বাধীনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়া উন্নয়ন তুলে ধরে। সাংবাদিকরা যেন সব ধরনের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নইলে মূলধারার গণমাধ্যমের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা ওঠে যাবে। যা ভাল কিছু না। এমনটা কাম্য না।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম বলেন, এই সরকারের আমলে সাংবাদিকরা সবসময় নিরাপদ। এই সরকার সাংবাদিকদের সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে।

অনুষ্ঠানের প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিজেসি'র সভাপতি রেজোয়ানুল হক।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি