ঢাকা, বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

হাসিনার আমলে বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫১, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশ থেকে পাচার হয়েছে।

রোববার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অর্থনীতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রতিবছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।

তিনি বলেন, শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে অর্থনীতির প্রতিটি খাত ধরে ধরে আলাদা বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে উন্নয়নের গল্প সাজাতে কিভাবে পরিসংখ্যানকে ম্যান্যুপুলেট করা হয়েছে। উন্নয়নের গল্প শোনানো হলেও ভেতরে ভেতরে চলেছে লুটতরাজের এক মহাযজ্ঞ।

প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই প্রতিবেদন আমাদের জন্য একটা ঐতিহাসিক দলিল। আর্থিকখাতে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তা ছিল একটা আতঙ্কের বিষয়। আমাদের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে কিন্তু কেউ এটা নিয়ে কথা বলেননি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে এ কমিটি গঠন করে। অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয়ের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ২৮ আগস্ট কমিটি হওয়ার পরপরই কাজে নেমে পড়ে কমিটি। নিজেদের মধ্যে বৈঠক করা ছাড়াও অংশীজনদের মতামত নেয় তারা।

কমিটি গঠনের সময় বলা হয়েছিল দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ও খাতভিত্তিক অর্থনীতির অবস্থা এবং সামনের দিনের জন্য করণীয় ঠিক করতে সুপারিশ থাকবে এ শ্বেতপত্রে।

এদিকে প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে মোটা দাগে যেসব বিষয়াদি নিয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো হলো-

* সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা- অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি ব্যয় (সরকারি বিনিয়োগ, এডিপি, ভর্তুকি এবং ঋণ), বাজেট ঘাটতির অর্থায়ন।

* মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা- উৎপাদন, সরকারি সংগ্রহ এবং খাদ্য বণ্টন।

* রফতানি, আমদানি, রেমিটেন্স, এফডিআই, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বৈদেশিক অর্থ প্রবাহ এবং ঋণ।

* চাহিদা, সরবরাহ, মূল্য নির্ধারণ, খরচ এবং ক্রয় চুক্তি।

* ব্যক্তিগত বিনিয়োগ- ক্রেডিট, বিদ্যুৎ, সংযোগ এবং লজিস্টিকসে অ্যাক্সেস।

* দেশে এবং বিদেশে কর্মসংস্থান, আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক মজুরি; যুব কর্মসংস্থান।

প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়-

শ্বেতপত্রটি প্রস্তুতের জন্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শক্রমে তিনি কমিটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে মনোনীত করতে পারেন। কমিটির রূপরেখা নিম্নরূপ হতে পারে:

ক) কমিটির সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন;

খ) পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের যথোপযুক্ত কোনো ভবনকে কমিটির দপ্তর হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে;

গ) পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করতে পারে;

ঘ) সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/ সংস্থা প্রস্তাবিত কমিটির চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে;

ঙ) ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি' নামে প্রস্তাবিত কমিটি আগামী নব্বই দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে এ কমিটি গঠন করে। অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয়ের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ২৮ আগস্ট কমিটি হওয়ার পরপরই কাজে নেমে পড়ে কমিটি। নিজেদের মধ্যে বৈঠক করা ছাড়াও অংশীজনদের মতামত নেয় তারা।

কমিটি গঠনের সময় বলা হয়েছিল দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ও খাতভিত্তিক অর্থনীতির অবস্থা এবং সামনের দিনের জন্য করণীয় ঠিক করতে সুপারিশ থাকবে এ শ্বেতপত্রে।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি