বিক্রম মিশ্রির মাধ্যেমে শেখ হাসিনার জন্য যে বার্তা বাংলাদেশের
প্রকাশিত : ২১:২০, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়েয়ে না আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি। এবং সেখানে থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে উস্কানিমূলকসহ বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে আসছেন শেখ হাসিনা। তবে, বাংলোদেশ সরকার তার এই বক্তব্য পছন্দ করছেন না বলে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির মাধ্যেমে শেখ হাসিনার জন্য বার্তা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকে এসব কথা জানানো হয়েছে। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পররাষ্ট্র সচিব।
পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়া যে সরকার পছন্দ করছে না, সেটা তাঁকে (হাসিনা) জানাতে বলা হয়েছে।
নিয়ে বাংলাদেশের আপত্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে জসীম উদ্দিন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করে যে বক্তব্য রাখছেন, এই বক্তব্যের প্রতি আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি থেকে করা কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের আপত্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে জসীম উদ্দিন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করে যে বক্তব্য রাখছেন, এই বক্তব্যের প্রতি আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আপনারা গতকাল শুনেছেন, তিনি (শেখ হাসিনা) একটি বক্তৃতা দিয়েছেন, এটা এই সরকার পছন্দ করছেন না এবং তারা যে কথা বলেছেন, তার উপস্থিতি দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’ পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি, তিনি (শেখ হাসিনা) ভারতে বসে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটা আমাদের পছন্দ হচ্ছে না।...এটা তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) যেন জানানো হয়। তাঁরা (বিক্রম মিশ্রি) বিষয়টিকে আমলে নিয়েছেন।’
সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমরা জোর দিয়ে বলেছি যে বাংলাদেশে বসবাসরত সবাই স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চা করে আসছে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি ও অপপ্রচারের সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সরেজমিনে বাস্তব অবস্থা দেখা ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিদেশি সাংবাদিকদেরও আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করাটা যে ঠিক হচ্ছে না, সেটা ভারতকে জানানো হয়েছে, এমনটা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমরা বলেছি, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য সমীচীন নয়। বাংলাদেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে এবং অন্যান্য দেশেরও একই ধরনের শ্রদ্ধাবোধ আমাদের প্রতি দেখানো উচিত।’
সীমান্তে হত্যার প্রসঙ্গটি আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি জীবন মূল্যবান। এ লক্ষ্যে ভারত সরকারকে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা অনুরোধ করেছি। তা ছাড়া, আন্তসীমান্ত অপরাধ, মাদক পাচারসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যক্রম নির্মূল করতে ভারতের সহযোগিতাসহ সীমান্তসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
এমবি
আরও পড়ুন