নেচার সাময়িকীর শীর্ষ দশে অধ্যাপক ইউনূস
প্রকাশিত : ২১:৫৭, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
জ্ঞান-বিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা বিশ্বের শীর্ষ ১০ ব্যক্তির তালিকা করেছে বিজ্ঞানবিষয়ক ব্রিটিশ সাময়িকী নেচার। এই তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
নেচার সাময়িকী এই নোবেলজয়ীকে নিয়ে শিরোনাম করেছে, ‘দ্য রেভল্যুশনারি ইকোনমিস্ট হু বিকাম দ্য আনলাইকলি লিডারস অব বাংলাদেশ’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ বিক্ষোভের পর আগস্টে বাংলাদেশের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর ছাত্রনেতারা শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের নেতৃত্ব নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান।
এটি মুহাম্মদ ইউনূসের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ছয় দশকের ক্যারিয়ারে তিনি দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন ধারণার জন্য নিজেকে পরিচিত করেছেন। যারা ইউনূসকে চেনেন তারা বলেন, গবেষণার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সমস্যা সমাধানে মূল বিষয়গুলো গভীরভাবে বোঝার দক্ষতাই তার কাজের মূল ভিত্তি।
ইউনূসের সঙ্গে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করা অ্যালেক্স কাউন্টস বলেন, তিনি আশির ঘরে পা দিয়েছেন, কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে এখনও সম্পূর্ণ সচল। তার মধ্যে সহানুভূতি রয়েছে। তার যোগাযোগ পদ্ধতিও চমৎকার।
মুহাম্মদ ইউনুস ক্ষুদ্রঋণের উদ্ভাবনী ধারণার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে প্রায়ই ১০০ মার্কিন ডলারের চেয়েও কম ঋণ দেওয়া হয়। সাধারণত ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্রদের কাছ থেকে অত্যধিক সুদ আদায়ের মাধ্যমে শোষণ চালিয়ে থাকে। তবে ইউনূস দেখিয়েছেন, ন্যায়সঙ্গতভাবে পরিচালিত হলে এই ক্ষুদ্র ঋণ সমাজের দরিদ্র মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সময়ে মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি একটি মডেল তৈরি করেন যেখানে ব্যবসার মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে খুব অল্প পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়। ১৯৮৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। তার এই উদ্ভাবনী ধারণা বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পায়।
নেচারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের মতো একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার চেয়ে ১৭ কোটি মানুষের একটি দেশের সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে এখন প্রায় সবারই একটি প্রশ্ন: ইউনূস কি ছাত্রদের দাবিগুলো পূরণে সক্ষম হবেন? এসব দাবির মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি দূরীকরণ, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা, চাকরি ও শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং বিক্ষোভে নিহতদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
এসএস//
আরও পড়ুন