জাতির পিতার হাত ধরেই ভাষা আন্দোলনের শুরু
প্রকাশিত : ২০:৫৭, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ``ভাষা আন্দোলন আমাদের মুক্তির পথ দেখিয়েছিল এবং এই আন্দোলনের পথে ধরেই আমরা কালক্রমে স্বাধীনতা পাই। আর এই আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠনের অগ্রনায়ক ছিলেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।``
শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের একুশের ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতির পিতা বলেছিলেন ১৯৫২ সালের আন্দোলন কেবল ভাষা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এই আন্দোলন ছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।``
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ওই দিনের ভাষণ থেকে বুঝা যায় ভাষা আন্দোলন আমাদের মুক্তির পথ দেখিয়েছিল। যখন ব্রিটিশরা দু’টি রাষ্ট্র তৈরি করে দেয় পাকিস্থান এবং ভারতবর্ষ; ঠিক সেই সময় নানা আলোচনা শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্থানের করাচীতে একটা সাহিত্য সম্মেলন হয়েছিল। সেখানে ঘোষণা হয়েছিল পাকিস্থানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা হওয়া উচিত উর্দু। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র এই ঘোষণার বিরুদ্ধে মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। সেখানে তখন জাতির পিতাও ছিলেন। তিনি তখন আইন বিভাগের ছাত্র। সেই সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সভা ডাকলেন। সভায় কয়েকটি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিল যে, ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করবেন। ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের মধ্য দিয়ে ভাষা দিবস হিসেবে ১১ মার্চ ঘোষণা দেওয়া হল। ১১ মার্চ ঘোষণা দিয়ে ওই দিন ধর্মঘট ডাকা হয়। তারই পূর্বে ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি তিনি ছাত্রদের দিয়ে ছাত্রলীগ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুললেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগ দিয়েই কিন্তু ভাষা আন্দোলনের যাত্রা শুরু এবং ১১ মার্চের ধর্মঘট করতে গিয়ে তখন অনেক নেতৃবৃন্দ গ্রেপ্তার হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুও ছিলেন। আওয়ামী লীগের ৭০জনের বেশি নেতাকর্মী পুলিশের হাতে লাঞ্চিত হয়। এরপরে নাজিমউদ্দিন সাহেব ভাষা সংগ্রাম পরিষদের সাথে একটা যোগাযোগের চেষ্টা করেন এবং তিনি তখন ওয়াদা দিয়েছিলেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিটা সংসদে তুলবেন এবং মেনে নেবেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের দাবি মেনে নেওয়ায় পরে ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় তারা মুক্তি পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় একটা সভা হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ভাষা সংগ্রামের পক্ষে জনমত গঠন করতে গিয়ে তিনি বার বার গ্রেপ্তার হন। এই ভাবেই ভাষা আন্দোলনের শুরুটা সৃষ্টি হয়।
কেআই/টিকে
আরও পড়ুন