স্বল্পোন্নত দেশসমূহের স্বার্থ রক্ষার আহবান নজিবুল হকের
প্রকাশিত : ২১:২৪, ২ মার্চ ২০১৮
অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের (এলডিসি গ্রুপ) স্বার্থ রক্ষার আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কাউন্সিলের (ইকোস) এক সভায় এমন মন্তব্য করেন নজিবুর রহমান।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই সভার সমাপনী অনুষ্ঠান ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এক বিবৃতিতে জানায়, গতকাল ইকোসের ‘অপারেশনাল এক্টিভিটিস সেগমেন্টে’র সাধারণ বিতর্কে এলডিসি গ্রুপের পক্ষে বক্তব্য দেন মো. নজিবুর রহমান।
বক্তব্য প্রদানকালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ উন্নয়ন ব্যবস্থা ইউএনডিএস এর ভূমিকার বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইউএনডিএস এর উন্নয়ন-অর্থায়ন রূপকল্পে এসডিজির তিনটি মাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রকেই সুষম গুরুত্বে বি্বেচনার পাশাপাশি ইউএনডিএস এর দক্ষতা ও কার্যকারিত বৃদ্ধি করতে অধিকতর নমনীয় তহবিল বিশেষ করে নিঃশর্ত অর্থ সহায়তা আরও বৃদ্ধি করতে হবে”।
তিনি আরও বলেন, “স্বল্পোন্নত দেশ, ভূ-বেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ-রাষ্ট্রসমূহের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে টেকসই উন্নয়নের অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ করতে ইউএনডিএস এর অধিকতর সংশ্লিষ্টতা প্রয়োজন; বিশেষ করে উৎপাদনশীলর সক্ষমতা বিনির্মাণ ও কাঠামোগত রূপান্তরের ক্ষেত্রে এ সহায়তা আরও বেশি দরকার”।
উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে এলডিসি গ্রুপ স্ব স্ব দেশে জাতিসংঘের নতুন প্রজন্মের কান্ট্রি টিমের উপস্থিতিকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে মর্মেও উল্লেখ করেন মুখ্য সচিব।
জাতীয় পর্যায়ের ইউএনডিএস-এর শক্তিশালী ও সামর্থপূর্ণ কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রতি বাংলাদেশ পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে উল্লেখ করে মুখ্য সচিব বলেন, “যেহেতু জাতিসংঘ উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামো বা উনডাফ জাতিসংঘের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সদস্য দেশসমূহ ও জাতিসংঘের মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ একক হিসেবে কাজ করে, তাই এর পরিকল্পনা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে প্রণয়ন করতে হবে। এই পরিকল্পনায় যাতে জাতীয় প্রাধিকার ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্ব স্ব চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিফলিত হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে”।
এলডিসি সংক্রান্ত ‘ইস্তাম্বুল ঘোষণা’ এক্ষেত্রে পথ দেখাতে পারে বলে মন্তব্য করেন মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আবাসিক সমন্বয়কারীদের অবশ্যই জাতিসংঘের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বাগত দেশগুলর নেতৃত্ব ও জাতীয় সত্ত্বাকে মেনে চলতে হবে এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার ক্ষেত্রে নিজেকে বিরত রাখতে হবে”।
একই সাথে স্বল্পোন্নত দেশসমূহ যে সকল ব্যতিক্রমী উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীগণ সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকবেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দেশটির উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়নে গতিশীলতা বৃদ্ধি করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নতুনভাবে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে অংশীদারিত্বে বিনির্মাণে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেজের প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানান নজিবুর রহমান।
জাতিসংঘ উন্নয়ন ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিবের চলমান উদ্যোগে বাংলাদেশ ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে যাবে মর্মে মুখ্য সচিব তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
এস এইচ এস//টিকে
আরও পড়ুন