প্রতিটি সরকারি কলেজে বোটানিক্যাল গার্ডেন
প্রকাশিত : ০৯:৩৩, ৫ মার্চ ২০১৮
বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের বংশবিস্তারে প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। এ উদ্যোগের আওতায় দেশের সরকারি কলেজগুলোর ক্যাম্পাসকে একেকটি বোটানিক্যাল গার্ডেন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রাথমিকভাবে পুরনো ও বড় ২৫টি সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে পরিকল্পিতভাবে লাগানো হবে বিপন্নপ্রায় ৫০০ জাতের উদ্ভিদ। কলেজগুলোতে এসব উদ্ভিদের টিস্যু কালচার ল্যাবও স্থাপন করা হবে। এ লক্ষ্যে নতুন একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
মাউশি সূত্র জানায়, দেশি ৫০০ প্রজাতির উদ্ভিদ বিলুপ্তির পথে। এই বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের মধ্যে কোনো কোনো প্রজাতির দু-একটি গাছ টিকে আছে। এগুলো স্বাভাবিকভাবে বংশবিস্তার করতে পারছে না। তাই এগুলো সংরক্ষণের জন্য দেশের স্বনামধন্য ২৫টি কলেজকে কাজে লাগানো হবে। মাউশি থেকে প্রথম পর্যায়ে এসব কলেজ অধ্যক্ষদের `অতিবিপন্নপ্রায়` ২০০ প্রজাতির উদ্ভিদের নামের তালিকা দেওয়া হবে। ওই তালিকা অনুযায়ী উদ্ভিদগুলো সংরক্ষণ ও বংশবিস্তারের ব্যবস্থা নেবে কলেজগুলো।
মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, `বিপন্ন উদ্ভিদগুলো খুঁজে বের করে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে বা স্বাভাবিকভাবে বংশবিস্তারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিলুপ্ত হতে যাওয়া উদ্ভিদগুলোর মধ্যে যেগুলো অধিক বিপন্ন এবং খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এমন ২০০টি উদ্ভিদের নামের তালিকা কলেজগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। কলেজগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে এগুলো সংরক্ষণ করবে। টিস্যু কালচারের জন্য ল্যাবও স্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে গত বছরের ২৮ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ২৫টি সরকারি কলেজকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি নির্দেশও দেওয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবকেও বিষয়টি জানানো হয়। ওই ২৫টি কলেজের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর ঢাকা কলেজ, ইডেন সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ।
এ ছাড়া রাজশাহীর সরকারি রাজশাহী কলেজ, সিলেটের সরকারি এমসি কলেজ, রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ, বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ, চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম কলেজ, খুলনার বিএল কলেজ, বরিশালের বিএম কলেজ, ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ, ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, যশোরের এমএম কলেজ, কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ, সরকারি দিনাজপুর কলেজ, হবিগঞ্জের বৃন্দাবন কলেজ, পটুয়াখালীর পটুয়াখালী কলেজ, গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ, কক্সবাজার সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, শেরপুর সরকারি কলেজ, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ও নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ। এরই মধ্যে এসব কলেজে বিপন্ন উদ্ভিদ ব্যাপকভাবে লাগানো শুরু হয়েছে।
কলেজ অধ্যক্ষদের দেওয়া মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়, উদ্ভিদবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধানের তত্ত্বাবধানে টিস্যু কালচার ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে চারা উৎপন্ন করে সংশ্নিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আশপাশের স্কুল-কলেজগুলোর অব্যবহূত জায়গায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে মাউশির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সংশ্নিষ্ট শিক্ষকদের প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
নির্দেশনায় টিস্যু কালচার ল্যাব স্থাপন, প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ সম্পর্কে তথ্য জানাতে বলা হয়। প্রকল্প সমন্বয়ক এবং বিপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে যোগাযোগ এবং প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার ল্যাব স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছে। সংবিধানের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন কর্মসূচির ১৮(ক) অনুচ্ছেদে উৎসাহী হয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মাউশির প্রকল্প-সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, হারিয়ে যাওয়া গাছ সংরক্ষণ ও শিক্ষাঙ্গনের আঙিনা সুন্দর রাখাও এ প্রকল্পের
এসএইচ/
আরও পড়ুন