উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে স্বজনরা
প্রকাশিত : ২২:৫২, ১২ মার্চ ২০১৮
সময় যতই বাড়ছে ততই ইউএস-বাংলা এয়ার লাইন্সের অফিসে নেপালগামী বিমানে থাকা যাত্রীদের স্বজনদের ভিড় বাড়ছে। তাদের কান্নায় অফিসের পরিবেশ যেন ভারি হয়ে উঠছে। রাজধানীর বারিধারায় অবস্থিত ইউএস-বাংলা এয়ার লাইন্সের অফিসে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার উম্মে সালমা। তিনি বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়েল সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ হিসেবে কর্মরত আছেন। তিন দিনের দাফতরিক কাজে সোমবার ইউএস-বাংলা বিমানে করে কাঠমান্ডু উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এরপরই আসে দুর্ঘটনার খবর। সঙ্গে সঙ্গে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের অফিসে ছুটে আসেন তার বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ। শুনতে থাকেন একের পর এক মৃত্যুর সংবাদ। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়ে যায় তার মধ্যে। বোনকে জীবিত ফিরে পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় আছেন তিনি।
গাজীপুরের শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামের ফারুক ও মেহেদী হাসান দম্পতির পাঁচ সদস্য। উভয় পরিবারই ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নেপাল যাচ্ছিল।
তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে এখনো জানতে পারেনি তাদের পরিবার। দুই পরিবারের ওই পাঁচ সদস্য হলেন উপজেলার নগরহাওলা গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে ফারুক আহমেদ (৩২), তাঁর স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি (২৫), তাঁদের একমাত্র সন্তান প্রেয়সী (৩), নগরহাওলা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান অমিও (৩৩) ও তাঁর স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা আক্তার (২৫)। উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজনরা।
ওই ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জনসংযোগ কর্মকর্তা সানজিদা বিপাশা, তার স্বামী রফিক জামান রিমু এবং তাদের ছয় বছর বয়সী ছেলে অনিরুদ্ধ। এ নিয়ে তার স্বজন ও সহকর্মীরা খুবই চিন্তিত।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ পায়নি। আমরা খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।
ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার বিমানে মোট ৬৭ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ৩২ জনই বাংলাদেশি। বাকিদের মধ্যে ৩৩ জন নেপালি, একজন চীন এবং একজন মালদ্বীপের নাগরিক।
সোমবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৭৮ জন যাত্রী ও ক্রু নিয়ে ছেড়ে যায় বিমানটি। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জিএম রাজকুমার ছেত্রী ৫০ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেমনাথ ঠাকুর বলেন, অবতরণের সময় উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। পরে বিমানটি পাশের একটি ফুটবল মাঠে গিয়ে পড়ে। ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ত্রিভূবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও নেপাল সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
নেপালের স্থানীয় দৈনিক দ্য হিমালয় টাইমস বলছে, বিমান বিধ্বস্তের এ ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কা প্রকাশ করেছে টিআইএ।
আর/এসি
আরও পড়ুন