ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪

নেপালে বিমান বিধ্বস্ত

চার বন্ধুর একসঙ্গে বিদায়,পড়তেন রাবিতে

প্রকাশিত : ১৩:৫৭, ১৩ মার্চ ২০১৮

অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব হাসান ইমাম ও ব্যাংক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম দুই বন্ধু। নজরুলের স্ত্রী মহিলা কলেজের শিক্ষিকা আক্তারা বেগম ও হাসান ইমামের অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষিকা বিলকিস আরা। স্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে দুই বন্ধু বেড়াতে গিয়েছিলেন নেপালে। সোমবার বিকেলে নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় চারজনেরেই মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে নজরুলের বাড়ি নগরের উপশহর ও হাসান ইমামের বাড়ি শিরোইল এলাকায়। গত বুধবার তারা রাজশাহী থেকে ঢাকায় যান।

দুই পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ ডেভলোপম্যান্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। প্রায় এক বছর আগে তিনি এলপিয়ারে চলে যান। তার স্ত্রী আক্তারা বেগম রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষিকা। প্রায় ছয় মাস আগে তিনি এলপিয়ারে যান।

আর হাসান ইমাম সর্বশেষ ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ছিলেন। এর আগে তিনি শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি অবসরে যান। আর হাসান ইমামের স্ত্রী বিলকিস আরা নাটোরের গোপালপুর কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা।

তারা চারজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। তার চারজনেই অর্থনীতি বিভাগে লেখাপড়া করেন।

নিহত বিলকিস আরার ভাই রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর মালেক বলেন, আমাদের নয় ভাই-বোনদের মধ্যে পঞ্চম বিলকিস আরা। বিলকিস আরার দুই ছেলে। তারা ক্যানাডায় থাকে। তার বোন উড়োজাহাজে চড়তে ভয় পেতেন। তার দুই ছেলে মাকে একাধিকবার ক্যানাডায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু উড়োজাহাজে উঠার ভয়ে তিনি ছেলের কাছে যাননি। এই প্রথম তিনি উড়োজাহাজে চড়ে নেপাল বেড়াতে যাচ্ছিলেন বলে জানান বিলকিস আরার ভাই আলমগীর মালেক।

আক্তারা বেগমের ভাগ্নে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, তার খালা আক্তারা বেগমের দুই মেয়ে কাকন ও কনক। তারা দুইজনেই ঢাকায় থাকেন। এদের মধ্যে কাকনের বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় থাকেন। তার কনক লেখাপাড়া করছে। রাজশাহীর বাড়িতে তারা দুইজনেই থাকতেন। গত বুধবার তার খালা আক্তারা বেগম ও খালু নজরুল ইসলাম নেপাল বেড়াতে যাওয়ার উদ্যেশ্যে ঢাকায় গিয়ে মেয়ে কাকনের বাসায় উঠেছিলেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে ৭১ জন আরোহী নিয়ে নেপালের কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি। ওই ফ্লাইটের মোট ৬৭ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ৩২ জনই বাংলাদেশের। আর ৩৩ জন নেপালের, একজন করে মালদ্বীপ ও চীনের নাগরিক ছিলেন।

ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ জানায়, ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ মডেলের ওই উড়োজাহাজে ৭১ জন আরোহীর মধ্যে ৬৭ জন ছিলেন যাত্রী, বাকিরা ক্রু। তাদের মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ, ২৮ জন নারী এবং দুইজন শিশু। এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫০ জন।

ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস ২১১ ঢাকার শাহজালাল থেকে রওনা হয় বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে। নেপাল সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডুতে নামার সময় পাইলট নিয়ন্ত্রণ হারালে উড়োজাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়।

 

একে// এআর

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি