ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪

নেপালে বিধ্বস্ত বিমান থেকে বেঁচে ফেরা এক বাংলাদেশির অভিজ্ঞতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৪, ১৩ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৯:২৭, ১৩ মার্চ ২০১৮

‘‘দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশের ঢাকা থেকে আমরা টেক অফ করি। আড়াইটার দিকে কাঠমান্ডু পৌঁছে পাইলট প্রথমে ল্যান্ড করার চেষ্টা করেও পারেনি। পরে ঘুরে আবার যখন দ্বিতীয়বার ল্যান্ড করার চেষ্টা করে, বাম দিকটা উঁচু হয়ে যায়। তখনি আমি বললাম, বাম দিকটা উঁচু হল কেন, আর তখনি ক্রাশ হয়ে গেল।’’

বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সেই দুর্ঘটনার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলেন বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে যাওয়া শাহরীন আহমেদ।

এর আগে কি আপনাদের কোন আভাস দেয়া হয়েছিল? আপনার কিছু টের পেয়েছিলেন? 

একটি দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, এরকম সতর্কবার্তাও পাইলট, কেবিন ক্রু বা অন্য কেউ দেয়নি। তারা নিজেরাও কিছু বুঝতে পারেননি।

শাহরীন আহমেদ বলছেন, ‘‘তখন সবাই ভয়ে চিৎকার করছিল আর আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলো। একেবারে স্বাভাবিকভাবেই বিমানটি নামছিল। একদম হঠাৎ করে সবকিছু হয়ে গেল।’’

তিনি বলছেন, ‘‘আগুন লাগার পর আনুমানিক প্রায় বিশ মিনিট পর সাহায্য আসে। সে পর্যন্ত আমি আর আরেকজন বিমানের ভেতরেই বসে ছিলাম। প্রচণ্ড ভয় লাগছিল আর হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করছিলাম। কারণ আমি জানতাম,আগুন লাগার পর অনেকে দমবন্ধ হয়েই মারা যায়।’’

উদ্ধারকারীরা আগুন নেভানোর পর বিমানের একটি অংশ খুলে যায় আর বাইরে থেকে পরিষ্কার বাতাস ভেতরে আসতে শুরু করে।

বাইরে আসার সময় তিনি দেখতে পান যে, আরেকজন কাছেই বিমানের ফ্লোরে পড়ে ছিল, তার হাত ঝুলছিল। তিনি বেঁচে আছেন কিনা, শাহরীনের তা জানা নেই।

ওই দুর্ঘটনার পর একেবারেই সচেতন ছিলেন শাহরীন আহমেদ। লোকজন তাকে ধরে বাইরে নিয়ে আসে। তখন আমি বলি, আমি হাটতে পারবো। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত হেটেও আসি। কিন্তু তখন পায়ে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। আসতে আসতে শুধু আগুন দেখতে পাই।

প্রথমবারের মতো তারা নেপালে বেড়াতে এসেছিলেন। তাদের পোখারা যাবার কথা ছিল। একজন বন্ধুর সঙ্গে সোমবার নেপালে বেড়াতে গিয়েছিলেন ঢাকার একটি স্কুলের শিক্ষক ২৯ বছরের শাহরীন আহমেদ।

শুক্রবার আবার তাদের ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই বন্ধু দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।

তার শরীরের অনেক জায়গায় আগুনে পুড়ে গেছে। বর্তমানে কাঠমান্ডুর মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিজে বেঁচে ফিরলেও, হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও বন্ধুর জন্য তার দুঃখ রয়ে গেল।

কেআই/এসি


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি