শিগগিরই দেশে আসছে লাশ
প্রকাশিত : ২১:৩৩, ১৩ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২২:৪৮, ১৩ মার্চ ২০১৮
নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইউএস-বাংলা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের লাশ শিগগিরই দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ জন্য এয়ারফোর্সের বিমানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ দূর্ঘটনায় মোট ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। অনেকের আত্মীয়-স্বজন কাঠমান্ডুতে ছুটে এসেছেন। কিন্তু তাদেরকে মর্গে ঢুকতে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঢুকতে না দেওয়া প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মরদেহগুলো আগুনে পুড়ে বীভৎস হয়ে গেছে। এগুলো চোখে দেখে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। মরদেহগুলো দেখে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এ আশঙ্কায় কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, আজ লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করার জন্য কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হসপিটালে (টিইউটিএইচ) নেওয়া হয়েছে। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ৪৯টি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টিইউটিএইচে নেওয়া হয়েছে।
লাশ দেশে নেওয়া সম্পর্কে নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস বলেন, লাশ দ্রুত দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া নিয়ে দূতাবাস কাজ করছে। শিগগিরই পাঠানো শুরু হবে। আর আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পেরেছি ১০ জন জীবিত আছেন। তারা এখানকার তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। দূতাবাসের পক্ষ থেকে আমি তাদের সঙ্গে দেখা করেছি।’
তিনি বলেন, এমন বড় কোনো দুর্ঘটনা নেপালে গত ২৫ বছরে হয়নি। তাই এমন পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকলেও এখানে কিছু সমস্যা রয়েছে।
মাশফি বিনতে শামস বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা নেপালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। লাশ শনাক্ত দ্রুত করা ও স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া বা দেশে পাঠানোই তাদের লক্ষ্য। ইতোমধ্যে কোঅর্ডিনেশন সেল খোলা হয়েছে দূতাবাসে।,
আহতদের স্বজনরা তাদের নিয়ে যেতে চাইলে সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এর উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যারা শঙ্কায় আছেন তাদেরকে যদি স্বজনরা ব্যাংকক বা সিঙ্গাপুরে নিতে চান সে ক্ষেত্রে আমরা ইউএস বাংলার সঙ্গে যোগাযোগটা করিয়ে দিচ্ছি যাতে এয়ারবাসে নেওয়া সম্ভব হয়।‘
এদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল নেতৃত্বাধীন একটি দল এরই মধ্যে কাঠমান্ডু পৌঁছেছেন।
হতাহতদের ৪৬ জন আত্মীয়কে নিয়ে নেপালে পৌঁছায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। নেপালের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩৭ মিনিটে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি অবতরণ করে। তাদের এনে একটি ব্রিফিং দিয়ে দূতাবাসের ট্রান্সপোর্টে গন্তব্যে পাঠানো হয়।
সোমবার (১২ মার্চ) ৭১ জন আরোহী নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে পৌঁছায়। অবতরণের সময় এতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে সেটি বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫০ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক ২৬ জন। এছাড়া বেঁচে আছেন আরও ১০ বাংলাদেশি।
এমন একটি ভয়াবহ দূর্ঘটনার জন্য কন্ট্রোল রুমের ভূমিকাকে দায়ী করা হচ্ছে। ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার (এটিসি) রুমের যোগাযোগ ত্রুটিকে দুর্ঘটনার কারণ মনে করছে ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ।
এসি
আরও পড়ুন