ঢাবিতে জাতীয় সম্মেলন
মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জোর
প্রকাশিত : ১৫:৪০, ১৪ মার্চ ২০১৮
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে কৃতদাস হিসেবে নয়, সমান নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট ভবনে আয়োজিত এক জাতীয় সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আয়োজনে দু’দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের প্রথম দিন আজ।
সম্মেলনের প্রথম দিনে বক্তব্য দেন, মানবাধিকার কর্মী, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও গবেষকরা। সস্মেলনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এহসানুল হক বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা ও নিপীড়ন চলছে। এই হত্যার দায় মিয়ানমান সরকার ও তাদের সেনাবাহিনী কোনোভাবে এড়াতে পারে না। যে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট) বিচারের মুখোমুখি হতে হবে তাদের।
এহসানুল হক বলেন, জোরপূর্বক মিয়ানমারের রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব, জাতীয়তা এবং নিজস্ব পরিচয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হবে এবং তাদের নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। এগুলো করতে হলে আমাদেরকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের উপরে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে । সেটা অব্যহত রাখতে হবে।
এসময় তিনি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মর্যাদার সঙ্গে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সম্মেলনের উদ্ধোধনী ব্ক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিবেশী মিয়ানমার সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে। তাদের এই নিষ্ঠুর রাষ্ট্রীয় অপরাধের ভিডিওচিত্র মোবাইলে ধারণ করা হয়েছে এবং তা ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। মিয়ানমারের বিচারের আগে রোহিঙ্গাদের নাগরিক সুবিধা দিয়ে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দ্বারা বিভিন্নভাবে নিপীড়নের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে তাদের উপযুক্ত মর্যাদা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। গণহত্যার হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাশে থাকার জন্য তিনি সরকারকে ধন্যবাদ দেন। তবে এদের দীর্ঘমেয়াদী ভার বহনকরা বাংলাদেশের জন্য হুমকি হবে বলেও সতর্ক করেন অধ্যাপক দেলোয়ার।
সম্মেলনে ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সাদেকা হালিম বলেন, রোহিঙ্গা আমাদের দেশে বেশি দিন থাকলে আমার দেশে নানা সমস্যা সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে তারা দেশেরে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে।
তারা বাংলাদেশে অবস্থান করলে একদিনে যেমন দেশের জন্য ঝুঁকি অন্যদিকে অর্থনীতি, রাজনৈতিক সামাজিক নিরাপত্তার বিষয় আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। তাই তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে অনেকেই এটাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য নির্ধারিত ক্যাম্প বরাদ্দ দেওয়া হলেও এখানে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার পানি সংকট রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে থাকলে এ সংকট আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই তাদের নিজ দেশে নাগরিক সুবিধা নিয়ে প্রত্যাবাসনের নিশ্চিত করতে হবে।
/ এআর /
আরও পড়ুন