ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪

‘জ্বলন্ত বিমান থেকে তিনজনকে লাফ দিতে দেখেছি’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪৬, ১৪ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৯:৫৮, ১৪ মার্চ ২০১৮

কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃত্যুর দুয়ার থেকে হাতে গোনা কয়েকজন ফিরে আসতে পেরেছেন। বেঁচে থাকলেও মৃত্যুর সাথে কারো কারো লড়াইটা এখনও চলছে। তাদের কেউ কেউ আবার বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে তিনি বেঁচে আছেন। বিমান থেকে হাসপাতালে-মাঝখানের এই সময়টুকুও মনে করতে পারছেন না অনেকে।

যারা বেঁচে আছেন তাদেরই একজন বাংলাদেশি শিক্ষক শাহরীন আহমেদ (২৯)। বর্তমানে কাঠমাণ্ডু মেডিক্যাল কলেজ টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসধীন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আমরা উড্ডয়ন করি। দুপুর আড়াইটার দিকে কাঠমাণ্ডু পৌঁছে বিমানের পাইলট প্রথমে ল্যাণ্ড করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ল্যাণ্ড করেতে পারেননি। পরে আকাশে কিছুক্ষণ ঘোরার পর যখন দ্বিতীয়বার ল্যাণ্ড করার চেষ্টা করেন, তখন বিমানের একপাশ উঁচু হয়ে যায়। তখনই আমি বললাম, বাঁ দিকটা উঁচু হলো কেন? আর মুহূর্তের মধ্যেই ক্রাশ হয়ে গেল।”

তিনি বলেন, “বাইরে হঠাৎ করেই প্রচণ্ড আগুন দেখতে পেলাম। আর আমাদের কেবিন ধোঁয়ায় ভরে গেল। এসময় বিকট শব্দে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটল। এরপর আগুন নিভে গেলে আমাদের উদ্ধার করা হয়।”

এক বন্ধুর সাথে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে নেপাল যাচ্ছিলেন। তার বন্ধু মারা গেলেও বেঁচে গেছেন শাহরীন আহমেদ।

শাহরীন বলেন, “আগুন লাগার প্রায় ২০ মিনিট পর সাহায্য আসে। সে পর্যন্ত আমি আর অন্য একজন বিমানের ভেতরেই বসেছিলাম। প্রচণ্ড ভয় লাগছিল আর হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করছিলাম। কারণ আমি জানতাম, আগুন লাগার পর মানুষ দমবন্ধ হয়েই মারা যায়।”

তিনি কাঁদতে কাঁদতে আরো বলেন, “বিমানে থাকা মানুষগুলো পুড়ে যাচ্ছিল। তারা চিৎকার করছিল আর বিমান থেকে পড়ে যাচ্ছিল। আমি জ্বলন্ত বিমান থেকে তিনজনকে লাফ দিতে দেখেছি। ভীষণ ভয়ানক পরিস্থিতি ছিল। সৌভাগ্যবশত কেউ আমাকে সেখান থেকে টেনে নিরাপদে নিয়ে যায়।”

চিকিৎসকরা বলছেন, শাহরীনের ডান পায়ে আঘাত লেগেছে। তার শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হতে পারে তার।

বসন্ত বহরা নামের আরেক যাত্রী বলেন, “হঠাৎ করেই বিমানটি প্রচণ্ড কাঁপতে শুরু করে এবং মুহূর্তের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটে। আমি জানালার কাছে ছিলাম। জানালা ভাঙতে পারায় আমি প্রাণে রক্ষা পাই। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।”

আর / এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি