নতুন কাঠামোয় বেতন পাবেন দর্জিরা
প্রকাশিত : ২২:৫৯, ২৯ মার্চ ২০১৮
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা মেটানোর কাজে নিয়োজিত ছোট-বড় অসংখ্য দর্জি কারখানা। এগুলোয় কাজ করেন বিপুলসংখ্যক শ্রমিক। দর্জি কারখানার সব শ্রমিকের নিম্নতম মজুরির নতুন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন কাঠামোয় এ খাতের নিম্নতম মোট মজুরি নির্ধারণ হয়েছে ৪ হাজার ৮৫০ টাকা। ২০০৮ সালের কাঠামোর তুলনায় নতুন কাঠামোয় মোট মজুরি বেড়েছে ১০৮ শতাংশ।
দর্জি কারখানায় নিম্নতম মজুরি নিয়ে সর্বশেষ পর্যালোচনা হয় ২০০৮ সালে। এরপর গত বছরের জুলাইয়ে নতুন বোর্ড গঠন করা হয়। ছয় মাস ধরেই চলছিল নতুন কাঠামোর পর্যালোচনা। সার্বিক পর্যালোচনা শেষে গত ৩১ জানুয়ারি নিম্নতম মজুরি বোর্ড নতুন কাঠামোর খসড়া সুপারিশ চূড়ান্ত করে। এ সুপারিশ অনুমোদন দিয়ে ২০ মার্চ নতুন কাঠামো ঘোষণা করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
দর্জি শ্রমিকের মোট গ্রেড রয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে উচ্চতর দক্ষ বা গ্রেড ১-এ রয়েছেন কাটার মাস্টার। আর নিম্নতম অদক্ষ বা গ্রেড ৫-এ রয়েছেন হেলপার ও টি-বয়। নতুন কাঠামো অনুযায়ী, দর্জি শিল্পে গ্রেড ৫-এর একজন অদক্ষ হেলপারের মূল মজুরি হবে জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় শহরে ৩ হাজার টাকা। এর সঙ্গে জেলা ও উপজেলা শহরে বাড়িভাড়া, চিকিত্সা ও যাতায়াত ভাতা হিসেবে যোগ হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৫০, ৫০০ ও ৩০০ টাকা। সব মিলিয়ে মজুরি দাঁড়াবে ৪ হাজার ৮৫০ টাকা। বিভাগীয় শহরে মূল মজুরির সঙ্গে যোগ হবে বাড়িভাড়া ১ হাজার ২০০ টাকা, চিকিত্সা ভাতা ৫০০ টাকা ও যাতায়াত ভাতা ৩০০ টাকা। অর্থাত্ বিভাগীয় শহরে নিম্নতম মোট মজুরি হবে ৫ হাজার টাকা।
২০০৮ সালে গ্রেড ৫-এর শ্রমিকদের নিম্নতম মূল মজুরি ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা। এর সঙ্গে বাড়িভাড়া, চিকিত্সা ও যাতায়াত ভাতা যোগ করে মোট নিম্নতম মজুরি ছিল ২ হাজার ৩২৫ টাকা। এ হিসাবে নতুন ঘোষিত কাঠামোয় সর্বনিম্ন গ্রেডে মোট মজুরি বেড়েছে ১০৮ শতাংশ।
জানা যায়, দর্জি শিল্পের বড় অংশজুড়ে রয়েছে সেলাই কারিগররা। তাদের বেশিরভাগই পিস রেটে কাজ করে। নতুন কাঠামো অনুযায়ী, সেলাই কারিগরদের মাসিক নিম্নতম মূল মজুরি হবে ৮ হাজার ২০০ টাকা। এর সঙ্গে জেলা ও উপজেলা শহরে বাড়িভাড়া, চিকিত্সা ও যাতায়াত ভাতা যোগ হবে যথাক্রমে ২ হাজার ৮৭০, ৫০০ ও ৩০০ টাকা। সব মিলিয়ে মজুরি দাঁড়াবে ১১ হাজার ৮৭০ টাকা। বিভাগীয় শহরেও মূল মজুরি ৮ হাজার ২০০ টাকা। এর সঙ্গে বাড়িভাড়া, চিকিত্সা ও যাতায়াত ভাতা বাবদ যথাক্রমে ৩ হাজার ২৮০, ৫০০ ও ৩০০ টাকা যোগ করে মোট মজুরি দাঁড়াবে ১২ হাজার ২৮০ টাকা।
পিস রেটে কাজ করা শ্রমিকদেরও নিম্নতম মজুরির হার নির্ধারণ করা হয়েছে। পণ্যভিত্তিক মজুরি কাঠামোয় দেখা যায়, কোট সেলাইয়ে পিস প্রতি মজুরি ৬০০, প্যান্টে ১৬৫, শেরওয়ানিতে ৭০০, সাফারিতে ৩০০, ডাক্তারদের অ্যাপ্রোনে ২০০, বোরকায় ২০০, ম্যাক্সিতে ১০০, শার্টে ১১৫, পাঞ্জাবিতে ১২০, পায়জামায় ৮০, ব্লাউজে ৫০ ও সালোয়ারে ৭০ টাকা। এছাড়া স্কুল ড্রেস প্রতি সেটের জন্য সেলাই কারিগররা ২০০ টাকা ও প্রতি সেট থ্রিপিসের জন্য ১৬০ টাকা পাবেন।
আরকে//টিকে
আরও পড়ুন