দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী-শিলাবৃষ্টি, নিহত ৪
প্রকাশিত : ২৩:২৯, ৩০ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২৩:৩৪, ৩০ মার্চ ২০১৮
দেশের বিভিন্ন স্থানে শুক্রবার কালবৈশাখীর ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিম অঞ্চলের দু’একটি জেলায় ঝড়ো হওয়ার সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টি। এতে চারজন নিহত হয়েছেন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি ও গাছপালা।
শিলাবৃষ্টিতে মাগুরা সদরে, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে এবং পাবনার ঈশ্বরদীতে একজন করে নিহত হয়েছে। এ ছাড়া যশোরে অভয়নগর উপজেলায় ঝড়ে বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়া তারে জড়িয়ে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে কালবৈশাখীর ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে চারজন নিহত হয়েছেন।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেট, ময়মনসিংহ, ফরিদপুরসহ কয়েকটি জেলায় এই ঝড়ো হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। রাজশাহী, টাঙ্গাইল, পাবনা, বগুড়া, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারিপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, যশোর, সিলেট অঞ্চলসহ দেশের নদী বন্দরসমূহে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
দিনাজপুর: জেলার পার্বতীপুরে দুপুরে শিলাবৃষ্টিতে সৈয়দ আলী (৫৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় শিলার আঘাতে আহত হয়েছেন শতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। যাদের অধিকাংশ নারী-পুরুষের মাথা ফেটে গেছে শিলার আঘাতে। নিহত সৈয়দ আলীর বাড়ি উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নের চৈতাপাড়া গ্রামে।
এছাড়া শিলার আঘাতে বাড়িঘরসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবজি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পার্বতীপুর উপজেলা ত্রাণ কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমের কাছে শিলাবৃষ্টিতে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পার্বতীপুরে ১০ ইউনিয়ন ও পৌরসভায় শিলাবৃষ্টি আঘাত হেনেছে।
ঈশ্বরদী: সন্ধ্যার দিকে পাবনার ঈশ্বরদীতে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের গৃহবধূ জামিলা বেগম (৫০) বাড়ির পাশের লিচুবাগানে ডালপালা কুড়াতে গিয়েছিলেন। তখন শিলার আঘাতে মারা যান তিনি। পরে স্বজনেরা তার লাশ উদ্ধার করেন।
লক্ষ্মীকুণ্ডা ছাড়াও উপজেলার শাহপরী ইউনিয়নে ব্যাপক আকারে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে লিচুবাগানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাগুরা: জেলায় সন্ধ্যায় ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় শিলার আঘাতে সদর উপজেলার বেরইল পলিতা ইউনিয়নের ডহরসিংড়া গ্রামের বদন মোল্লার ছেলে আকরাম হোসেন (৪৫) নিহত হন।
শিলাবৃষ্টিতে জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সদর উপজেলার জগদল, শত্রুজিৎপুর, গোপালগ্রাম, কুচিয়ামোড়া এবং বেরইল পলিতা ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সুফিয়ান।
লালমনিরহাট: জেলায় সকালে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ৩৩৭ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি এবং ছোট ও মাঝারি প্রায় এক হাজার গাছপালা ভেঙে গেছে। জেলা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
কুড়িগ্রাম: জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে শিলাবৃষ্টিতে ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে কয়েক শ ঘরবাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে। পাট, ভুট্টা, করলা, পটলসহ বিভিন্ন সবজি খেত অনেকাংশে নষ্ট হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আম, লিচু এবং সবজি খেতের।
যশোর: জেলার অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ গ্রামে ঝড়ে বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়া তারে জড়িয়ে লাইজু খাতুন (১৯) নামের এক কলেজছাত্রী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো দুজন। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। লাইজু সদর উপজেলার সিঙ্গিয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
মেহেরপুর: জেলার গাংনী উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে গেছে কলা গাছ, পানের বরজ। এছাড়া আম ও লিচু গাছেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
আর/এসি
আরও পড়ুন