ঢাকা, শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪৩, ৯ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৪৪, ৯ এপ্রিল ২০১৮

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বর্তমান কোটাব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকটি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

কোটা সংস্কারের বিষয়ে আজকের মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, না আজকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় আছে। অনির্ধারিত আলোচনা তো এরকম কিছু হয়-ই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হলো এটার স্টেক হোল্ডার। তারা এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে। দেখে অবহিত করবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে পরীক্ষার-নিরীক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক্ষেত্রে তিনি কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, ‘ইনফরমাল আলোচনা তো, ইনফরমালভাবেই....ধরেন....।’

একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটার সংস্কারের দাবি কতটা যৌক্তিক বা বিদ্যমান ব্যবস্থায় কোনো গলদ আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংবিধানে যেভাবে বলা আছে যে, অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে সেটি অব্যাহত থাকবে। সেই সঙ্গে সরকারি চাকরিতে কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাধারীদের সুযোগ করে দিতে হবে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কোটা সংস্কারের তাগিদ দেন তিনি।

কোটব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। সর্বশেষ রোববার তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগের সড়ক অবরোধ করে রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িতে পড়েন আন্দোলনকারীরা। গভীর রাত পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে।

কোটা সংস্কারের বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোটা নিয়ে আসলে তো কোনো সমস্যা নেই। এখন যে কোটাব্যবস্থা বহাল রয়েছে সেখানে মেধা কোটা ৪৫ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, নারী কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কোটা ৫ শতাংশ, ক্ষেত্রবিশেষে জেলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিবন্ধী কোটা ১ শতাংশ।

তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধা বা অন্যান্য কোটাগুলো যদি পূরণ করা সম্ভব না হয় তবে তা মেধাতালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করতে হবে। সেটা পূরণ করা হয়েছে।

৩৩তম বিসিএসে মেধাকোটায় পূর্ণ হয়েছে ৭৭ দশমিক ৪০ শতাংশ, ৩৫তম বিসিএসে ৬৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ মেধা তালিকা থেকে এসেছে। ৩৬তম বিসিএসে ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ মেধাকোটায় নিয়োগ পেয়েছেন বলেও জানান শফিউল আলম।

তিনি বলেন, কোটার মাধ্যমে মেধা অবহেলিত হয়নি। কোটার ক্ষেত্রেও যারা মেধাতালিকায় ভালো তারা আসছেন। এমন না যে মেধাতালিকায় যারা আছেন তারা অবহেলিত আছেন, পেছনে পড়ে যাচ্ছেন। কোটার দ্বারা কারও মেধা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

বিভিন্ন কোটায় প্রার্থী পাওয়া যায় না, তাহলে কোটা সংস্কারে সমস্যা কোথায় জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যেটা মডিফাই করা হয়েছে অর্থাৎ পদ পাওয়া না গেলে মেধাতালিকার শীর্ষে যারা আছেন তাদের দিয়ে পূরণ করা হবে। এটাই তো একটা সংস্কার।

কোটা হচ্ছে একটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। এর মাধ্যমে অনগ্রসর যারা আছেন তাদের সামনে আনা হয়।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোটার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যা আলোচনা হয়েছে তা জানিয়েছি তো। কোটার কারণে যারা মেধাবী তারা খুব বেশি বঞ্চিত হয়নি। আপনাদের তো তিনটা বিসিএসের রেজাল্ট দিয়ে দিলাম।

কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকা থেকে তা পূরণের সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভা দিলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত ব্যাখ্যায় জানিয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদের ক্ষেত্রে কোনো কোটা পূরণ না হলে অন্যান্য কোটা দিয়ে পূরণ করতে হবে। এ জন্য আন্দোলন হচ্ছে।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশটি আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব।
এদিকে কোটার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। সেখানে তারা তাদের দাবি উত্থাপন করবেন।
/ এআর /


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি