কোটা সংস্কার চায় সংসদীয় কমিটি
প্রকাশিত : ২৩:৪৫, ২২ এপ্রিল ২০১৮
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছে। রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কোটা পদ্ধতি সহজ করার কথাও বলা হয়েছে কমিটিতে।
দেশ, ইতিহাস ও আঞ্চলিকতার প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের কথা বলেছেন ঠিকই। কিন্তু আমাদের কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। আঞ্চলিকতার প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। পিছিয়ে পড়া নৃগোষ্ঠীর প্রতিও আমাদের দায় আছে।”
সংবিধানে সমতা এবং পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংবিধানে সমতার কথা বলা আছে। পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর সুযোগ-সুবিধার কথাও বলা হয়েছে। এসব বিবেচনা করে আমরা কোটা পদ্ধতি সহজীকরণের কথা বলেছি। যুক্তিযুক্ত সংস্কারের কথা বলেছি।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকের অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, “বৈঠকে জনপ্রশাসন সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান বলেছেন, কোটা পদ্ধতি নিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরে যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।”
সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আশিকুর রহমান বলেন, এই কোটা নিয়ে যেন কোনো ষড়যন্ত্র ও দুরভিসন্ধি না হয়, সে বিষয়টিতেও নজর রাখতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, “এনসিআরটিএ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে নিয়োগ দিচ্ছে, তাতে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এক-একজন ব্যক্তিদের অনেক দূর-দূরান্তে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রকৃত মেধার যাচাই হয় না। এজন্য আমরা নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির মাধ্যমে নিয়োগ নিতে বলেছি।”
এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে গত দুই মাস ধরে।
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে ১১ এপ্রিল কোটা প্রথা বাতিল করার কথা বলেন। কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করার কথাও বলেন তিনি।
পরদিন কয়েকটি দাবি রেখে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। তারা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে সরকারি গেজেট দ্রুত প্রকাশের দাবি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
এমএইচ/এসি
আরও পড়ুন