বজ্রপাতে আট বছরে ১৮শ’র বেশি মানুষের মৃত্যু
প্রকাশিত : ১৭:৪৩, ১ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৮:০৫, ১ মে ২০১৮
বাংলাদেশে বজ্রপাতে গত আট বছরে এক হাজার ৮০০ এর বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বজ্রপাতের ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম. এ ফারুকের নেতৃত্বে একদল গবেষকের করা প্রতিবেদনে এমনটিই জানানো হয়েছে।
অধ্যাপক ফারুক বিবিসি বাংলাকে বলেন, এ গবেষণার জন্য ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ আট বছরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশের প্রথম সারির চারটি দৈনিক সংবাদপত্রে বজ্রপাতে মারা যাবার যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোকে একত্রিত করে দেখা গেছে, গত আট বছরে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা ১৮০০`র বেশি।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় সুনামগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম ব্যবহার করে দেখা গেছে রংপুর বিভাগের মধ্যে ঠাকুরগাঁও এবং লালমনিরহাটে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়। রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় নেত্রকোনায়। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় কিশোরগঞ্জে।
অধ্যাপক ফারুক আরও বলেন, সুনামগঞ্জে বজ্রপাত বেশি হলেও মানুষ মারা যাচ্ছে বেশি উত্তরাঞ্চলে। তিনি আরও বলেন, দুটো বিষয়- একটা জায়গায় বজ্রপাত বেশি হচ্ছে, কিন্তু মারা যাচ্ছে কম। আবার অন্য জায়গায় বজ্রপাত কম হলেও মানুষ মারা যাচ্ছে বেশি।
বজ্রপাত ঠেকাতে উঁচু তালগাছকে খুবই কার্যকর বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। গবেষণায় এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন অধ্যাপক ফারুক এবং তাঁর সহকারীরা।
তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আলাস্কা এবং কানাডায় বজ্রপাত নিয়ে গবেষণা করেন। সেখান থেকে ফিরে বাংলাদেশের বজ্রপাতের বিষয়ে মনোযোগী হয়ে উঠেন অধ্যাপক ফারুক। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের মে মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতে একই দিন ৫৭জন মানুষ মারা যায়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আমি গবেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠি।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ২৫ মিলিয়ন বজ্রপাত হয়। কিন্তু বজ্রপাতে মানুষ মারা যায় ৪০ থেকে ৫০জন। ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তথ্য মতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২৪০০`র মতো বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাতের প্রবণতা বাড়ছে এবং এর সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এমজে/
আরও পড়ুন