ঢাকা, সোমবার   ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটার দরকার নেই: নুজহাত চৌধুরী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৭, ৭ মে ২০১৮

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোনো কোটার দরকার নেই। তারা যোগ্যতা দিয়েই চাকরি পাবে। আমার বাবার কোনো সার্টিফিকেট ছিল না। কোনো কোটা ছাড়াই ২০তম বিসিএসে আমি দ্বিতীয় হয়েছিলাম।’
শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. নুজহাত চৌধুরী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বুদ্ধিজীবী ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে। আবদুল আলীম চৌধুরীকে একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর বাসা  থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানী বাহিনী।
ডা. নুজহাত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং প্রজন্ম একাত্তরের প্রতিষ্ঠাতা সাংস্কৃতিক সম্পাদক। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একাত্তরের শহীদ ডা. আলীম চৌধুরীর দুই মেয়ের মধ্যে ছোট। শিক্ষাবিদ ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী তার মা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নুজহাত চৌধুরী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী ২১ বছরে মুক্তিযোদ্ধাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা নিজের পায়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
যারা ‘আমি রাজাকার’লেখা বুকে নিয়ে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে দাঁড়িয়েছেন তাদের ‘কুলাঙ্গার’ আখ্যায়িত করে  নুজহাত বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যদি তাদের রক্তে দেশ স্বাধীন না করতেন তাহলে এখন যারা বিসিএস ক্যাডার হচ্ছেন, বড় চাকরি করছেন তাদের পশ্চিম পাকিস্তানের কেরানি হয়েই থাকতে হত।
নুজহাত আরও বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে ছোট ছোট ছেলেদের বুকে ‘আমি রাজাকার’ লেখা দেখে জীবনে প্রথম মনে হয়েছে ’৪৭ বছর আগে বাবা মরে গিয়ে বেঁচেছেন।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে গত মাসে দেশজুড়ে বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ হয়। এর মধ্যে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সংসদে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা সুযোগ পাবে না, তো কি রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে?’
এরপর কেউ কেউ ‘আমি রাজাকার’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে এবং বুকে ‘আমি রাজাকার’ লিখে মতিয়া চৌধুরীর ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগরের কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার দরকার নেই তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি আছে। এখানে থাকবে না কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত তালিকাও করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপস হবে না।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ওয়াসিকা আয়শা খান বক্তব্য দেন।
/ এআর /


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি