ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

৯০ শতাংশ নারী স্বামীর যৌন নির্যাতনের শিকার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪৮, ১১ মে ২০১৮

অন্য পুরুষ তো বটেই, নিজ স্বামীদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নারীরা। বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ স্বামীর দ্বারা তাদের স্ত্রীরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সবথেকে ভয়ানক তথ্য এই যে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ নারীরই বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কে নেই কোন ধারণা।

আজ শুক্রবার দিনব্যাপী ‘যৌন সন্ত্রাস বিরোধী গণ–কনভেনশনে’ অংশ নেওয়া বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের হলে আয়োজিত কনভেনশনের উদ্বোধন করেন তিন মুক্তিযোদ্ধা বীরাঙ্গনা ফাতেমা শেখ, আমেনা শেখ, কাঞ্চন মালা ও নির্যাতিত নারী বিচিত্রা তির্কী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কয়েকজন নির্যাতিত নারী এ কনভেনশনে যোগ দেন ও বক্তব্য দেন।

এসব পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে নারীর প্রতি বৈষম্য রোধ করতে হবে বলে জানান তারা।। সমাজে নারী-পুরুষের সমান অধিকার বাস্তবায়ন করার প্রতিও জোর দেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে ‘যৌন সন্ত্রাস বিরোধী গণ–কনভেনশন’ কমিটির আহ্বায়ক লেলিন চৌধুরী মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কতভাগ নারী বিবাহিত ধর্ষণের শিকার তার হিসাব বের করা সম্ভব নয়। তবে ব্যক্তিপর্যায়ে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জীবনে এক বা একাধিকবার বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন নারীর সংখ্যা ৯০ ভাগের বেশি। তবে এর চেয়েও বড় কথা বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কে অধিকাংশ নারীর ধারণা নেই।’

অনুষ্ঠানে আসা বিশেষ অতিথি সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি জিনাত আরা তার বক্তব্যে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন নিরোধের জন্য একদিকে গণসচেতনতা তৈরি, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঠিক তদন্তের ওপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের সঠিক চর্চার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সংশ্লিষ্ট আইনকেও তিনি বিস্তৃত করার কথা উল্লেখ করেন। প্রয়োজনে আইনে সংশোধনী আনার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

‘যৌনসন্ত্রাস নিরোধ এবং নির্মূল’ আইন নামে একটি আইন প্রণয়নের দাবি জানান কনভেনশনের আয়োজকেরা। এ আইনে যৌন অপরাধীকে শাস্তির পাশাপাশি যারা মিথ্যা অভিযোগ করবে, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

এছাড়াও স্কুল–কলেজ–মাদ্রাসা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষের সমতা ও পারস্পরিক সম্মানবোধের বিষয়ে পাঠদানের দাবি জানানো হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পর্নো ছবি ছড়িয়ে পরা ঠেকাতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সচেষ্ট হওয়ারও আহ্বান জানান বক্তারা।

কনভেনশনের বিভিন্ন সেশনে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মাহফুজা খানম, রোকেয়া কবির, অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসেইন, অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন খান, রওশন আরা বেগম প্রমুখ।

আজ সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয়ে কনভেনশনের কার্যক্রম শেষ হয় বিকেলে। যৌনসন্ত্রাস নির্মূলের অঙ্গীকার নিয়ে সমাপনী অধিবেশন থেকে কর্মসূচি ও কমিটি ঘোষণা করা হয়। লেলিন চৌধুরীকে আহ্বায়ক এবং তারিক হোসেন, মোখলেসুর রহমান ও ফেরদৌস আহমেদকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪৩ সদস্যের নির্বাহী কমিটিও ঘোষণা করা হয় এসময়।

//এস এইচ এস//টিকে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি