ঢাকা, রবিবার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হালিমা

ভাষা সৈনিকের সঙ্গে ৬৫ বছরের সম্পর্কে যতিচিহ্ন পড়ল: আনিসুজ্জামান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:২৪, ৪ জুলাই ২০১৮

প্রিয়জনদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হলেন ভাষা সংগ্রামী অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন। আজ বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলী পর্বে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা তার কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৮৬ বছর বয়সী হালিমা।

রাতে ধানমণ্ডি নাতনীর বাসভবনে ফ্রিজিং ভ্যানে রাখা হয় হালিমা খাতুনের মরদেহ। বুধবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

সেখানে শ্রদ্ধা জানায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাসদ (নাজমুল হক প্রধান), সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ভাষা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্র ও জাদুঘর, ভাষা আন্দোলন স্মৃতিরক্ষা পরিষদ, উদীচী, খেলাঘর, ছায়ানট, পেশাজীবী নারী সমাজ, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ আরো অনেক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।

হালিমা খাতুনের একমাত্র সন্তান আবৃত্তিশিল্পী প্রজ্ঞা লাবণী এ সময় বলেন, ভাষা আন্দোলনের স্মৃতির পথ ধরে থেকে যাবেন হালিমা খাতুন। তার নাম উচ্চারিত হবে পরবর্তী প্রজন্মের কণ্ঠে।

শ্রদ্ধা জানাতে এসে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, হালিমা খাতুনের সঙ্গে আমার ৬৫ বছরের সম্পর্কে যতিচিহ্ন পড়ল মঙ্গলবার। আমি হালিমা খাতুনকে আমার বড় বোনের মতো জানতাম। তিনি আমাকে অনুজের মতো স্নেহ করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আমার সিনিয়র ছিলেন। কিন্তু আমরা একইসঙ্গে সাংস্কৃতিক আন্দোলন করেছি। দীর্ঘকালের এই সম্পর্ক আজ শেষ হল,”বলতে বলতে আবেগ্লাপুত হয়ে পড়েন প্রবীণ এই শিক্ষাবিদ।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীর অভিযোগ, দীর্ঘকাল অসুস্থ থাকার পরও সরকার বা সামাজিক কোনো সংগঠন হালিমা খাতুনের শারীরিক অবস্থার ‘কোনো খোঁজ করেননি’।

শ্রদ্ধা জানাতে আসেন হালিমা খাতুনের সহযোদ্ধা ভাষা সংগ্রামী রওশন আরা বাচ্চু। তিনি বলেন, বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারিতে সবাই আমাদের বলেছিল, ‘তোমার আজ লড়াই করো না। জীবনমরণের প্রশ্ন।’ কিন্তু আমরা সেদিন কথা শুনিনি কারো। আমরা ১৪৪ ধারার ব্যারিকেড ভাঙ্গব। হালিমা রইল আমাদের সঙ্গে একেবারে মিছিলের অগ্রভাগে। আমরা যদি সেদিন ১৪৪ ধারা না ভাঙ্গতাম, যদি সেই আত্মত্যাগ না করতাম.. তবে আজকে বাংলা ভাষা কোথায় থাকত!

শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে হালিমা খাতুনের মরদেহ নিয়ে আসা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে জানাজার পর তাকে দাফন করা হবে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি