ঢাকা, রবিবার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪

পরীক্ষার গ্যাপ কমিয়ে আনার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:২৫, ১৯ জুলাই ২০১৮

মাত্র ৫৫ দিনে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার প্রশংসা করে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষার গ্যাপ কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এখন পরীক্ষা শেষ করতে যেরকম প্রায় দুই মাস সময় লেগে যায়, তা কমিয়ে আনতে পারলে শিক্ষার্থীদের যেমন আরও বেশি মনোযোগী করা যাবে, পরীক্ষা নিয়ে ‘গুজব আর অপপ্রচারের’ হাত থেকেও মুক্তি মিলবে।

আজ বৃহস্পতিবার গণভবনে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ পরামর্শ দেন। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় যে পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে তার প্রশংসা করেন প্রধামন্ত্রী। সেই সঙ্গে এবার প্রশ্নফাঁস ছাড়া শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

সরকার প্রধান বলেন, একটা ছোট্ট অনুরোধ আমার থাকবে, সেটা হল পরীক্ষার সময়টা। পরীক্ষার একটা দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। ২ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু, আর ২৪শে মে পর্যন্ত পরীক্ষা। এই অত দীর্ঘ সময়, বোধ হয় রেজাল্ট দিতেও আপনারা এত সময় নিলেন না পরীক্ষা নিতে যত সময় নিয়েছেন। সেখানে পরীক্ষার সময়টা কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সেটা নিয়ে ভাবুন।

নিজের সময়কার পরীক্ষা পদ্ধতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন পরীক্ষা দিয়েছি, তখন তো আমাদের দুই বেলা করে পরীক্ষা দিতে হত। সকালে এক পেপার, বিকালে এক পেপার। আমাদের তো দম ফেলার সময়ই থাকত না, সাত দিনে পরীক্ষা শেষ। ১০টা সাবজেক্ট, মাঝখানে দুই দিন ছুটি ধরে আমাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত।

আজকের বাস্তবতায় পরীক্ষার সময় কী করে কমানো যায়, তা খুঁজে দেখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাকে আরেকটু কমিয়ে আনার ব্যবস্থা যদি করতে পারেন, তাহলে কিন্তু আপনি দেখবেন, ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে, পরীক্ষাটাও তাড়াতাড়ি হবে, আর এখানে ওই যে নানা ধরনের কথা প্রচার টচার, অপপ্রচার, তার হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা বদনাম হত প্রশ্নপত্র ফাঁস… প্রশ্নপত্র ফাঁস সমস্যাটা কিন্তু শুধু আমাদের দেশে না। অনেক উন্নত দেশেও এই সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে কারণ ডিজিটাল হওয়াতে… ডিজিটালের যেমন সুফল আছে, মাঝেমাঝে কিছু কুফলও এসে যায়। খুব তাড়াতাড়ি সেটা প্রচার হয়ে যায়।

এবার এইচএসসিতে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ না ওঠায় সন্তোষ প্রকাশ করে সরকারপ্রধান বলেন, এবারে যে পদ্ধতিটা নেওয়া হয়েছে, সেটা খুবই চমৎকার। আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীরা চলে যাবে পরীক্ষার হলে। ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে, কয়েকটা সেটের প্রশ্নপত্র থাকে, কোন সেটটা দেওয়া হবে। তার ফলে নকল বন্ধ হয়েছে।

তিনি বলেন, ছেলেমেয়েরা একটু পড়াশোনা করলেই যেখানে ভালো রেজাল্ট করতে পারে, সেখানে তারা নকল করবে কেন?

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইনও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ২৬২ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। পাসের হার আর পূর্ণ জিপিএ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা- দুটোই গতবারের চেয়ে কমেছে।

প্রসঙ্গত গত ২ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলে গত ১৩ মে পর্যন্ত। আর ১৪ থেকে ২৪ মের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। এবারই প্রথম ৫৫ দিনে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হলো।

এ বছর মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডসহ ১০ শিক্ষাবোর্ডে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মোট ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৫৭ জন শিক্ষার্থী। মোট পাশ করেছে ৮ লাখ ৫১ হাজার ৭০১ জন। যা গত বছরের চেয়ে ৫৭ হাজার ৯০ জন বেশি।

এবার ১০ বোর্ডের পাসের গড় হার ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গতবার এই হার ছিল ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার কমেছে ২ দশমিক ২৭ শতাংশ।

জিপিএ ৫ পেয়েছে ২৯ হাজার ২৬২ জন। গতবার পেয়েছিলেন ৩৭ হাজার ৭২৬ জন। ফলে জিপিএ ৫ কম পেয়েছে ৮ হাজার ৪৬৪ জন। 

যেভাবে মুঠোফোনে জানা যাবে ফল

আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনে ফল পেতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখতে হবে। এরপর ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে মিলবে ফল।

মাদ্রাসা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা HSC লিখে স্পেস দিয়ে MAD স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাবেন। পরের এসএমএসে তাঁরা ফল পেয়ে যাবেন।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে TEC লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। পরের এসএমএসে ফল জেনে যাবেন শিক্ষার্থীরা।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি