ঢাকা, সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪

নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গার্ল গাইডস শাখা খোলা হবে : প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪৪, ২৯ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ০০:০৮, ৩০ জুলাই ২০১৮

দেশব্যাপী গার্ল গাইডস’র কর্মকাণ্ড আরও জোরদার ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নারীদের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গার্ল গাইডস’র শাখা খোলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশের প্রায় সবক’টি বালক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কাউটস এবং শাপলা কাব শাখা গঠন করা হয়েছে। কিন্তু মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে পরিমাণ গার্ল গাইডস শাখা খোলা হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছোট বেলায় আমরা দেখেছি, সে সময় নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিপুল সংখ্যক গার্ল গাইডস’র শাখা চালু ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে তার সরকারি বসভবন গণভবনে বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কার্যালয় বেইলি রোডস্থ ১০তলা ভবন, বাংলাদেশ স্কাউটস’র শতাব্দী ভবনসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থপন এবং শাপলা কাব এওয়ার্ড বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ স্কাউটস’র সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের অনুরোধ জানাবো- আপনারা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই সংগঠনটি গড়ে তুলুন। বিশেষ করে নারীদের যতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এর প্রত্যেকটিতেই গার্ল গাইডস’র শাখা খোলা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের গণশিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং স্কাউটস এবং গার্ল গাইডস’র কর্মকর্তারা এখানে আছেন- তারা এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’

বাংলাদেশ স্কাউটস’র প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান এবং বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার সৈয়দা রেহানা ইমাম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ স্কাউটস’র জাতীয় কমিশনার (প্রোগ্রাম) মো. আতিকুজ্জামান।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে দেশের ১২টি অঞ্চলের কাব স্কাউটসদের মাঝে কাব স্কাউটসদের সর্বোচ্চ সম্মান ‘শাপলা কাব এওয়ার্ড’ প্রদান করে তাদের ব্যাজ পরিয়ে দেন।

৬ থেকে ১১ বছর বয়সীদের সংগঠন কাব স্কাটউসদের মধ্যে ১৮৩ জন এ বছর এই সম্মান অর্জন করেন।

প্রধানমন্ত্রী স্যার লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল প্রতিষ্ঠিত সারা বিশ্বের স্বাউটস এবং গার্ল গাইড আন্দোলনের প্রশংসা করে বলেন, আমি মনে করি এই যে, ছোটবেলা থেকে শিশুরা শিখছে এবং তাদেরকে সবকিছু শেখানো হচ্ছে। যেমন- তারা পরিবেশ রক্ষার জন্য কাজ করছে, বৃক্ষরোপণ করছে, আমাদের দেশের যারা দুস্থ, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ এবং অসহায় মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ানো, এমনকি আমাদের বিদ্যুৎ সাশ্রয়েও জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে স্কাউটসরা পারদর্শিতা দেখিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য দিয়ে ছোটবেলায় থেকেই সবার মাঝে মানবিক গুণাবলীগুলো তৈরি হবে। তাদের মানবতাবোধ জাগ্রত হবে, সচেতনতা বাড়বে।

তিনি বলেন, আজকের শিশুরাই পরবর্তীতে যখন জীবন-জীবিকার জন্য কাজ করবে তখন এই গুণাবলীগুলোই দেশের ও জাতির উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি এসব সমাজসেবামূলক কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, ‘তাই আমি মনে করি এই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা উচিৎ, আরও বিস্তৃত হওয়া উচিৎ এবং এর ফলে দেশ থেকে আমরা এই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকসহ নানা ধরনের অসামাজিক কাজটা বন্ধ করতে পারবো।’

শেখ হাসিনা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমাদের সচেতন ছেলে-মেয়েরাই এদেশকে ভবিষ্যতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে জাতির পিতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। আর সে লক্ষ্য নিয়েই এদেশের যাত্রা শুরু।

তিনি বলেন, আজকে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। হয়তো বহু পূর্বেই আমরা তা করতে পারতাম যদি না বাঙালির জীবনে ওই ’৭৫’র ১৫ আগস্টের মতো কালরাত্রি না হানা দিত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ এ জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থেমে যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকেই আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।

তিনি বলেন, এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। দেশ ও জাতিকে ভালবাসতে শিখাতে হবে এবং দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্কাউটস এবং গার্ল গাইডস তাদের এই সংগঠনের কাজটাই হচ্ছে দেশের সেবা, মানুষের কল্যাণে কাজ করা, পাশে দাঁড়ানো, নিয়মানুবর্তিতাও শৃঙ্খলা শেখা এবং দেশের কল্যাণে কাজ করা।

তিনি বলেন, আমি দেখেছি যেকোন দুর্যোগ-দুর্বিপাকেও স্কাউটস দল ছুঁটে যায়, মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সে কারণে আমি মনে করি এই সংগঠনগুলো আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী স্কাউটসের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করে বলেন, ঢাকায় গার্ল গাইডস’র জন্য ১০ তলা ভবন করা হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যেখানে গার্ল গাইডের নিজস্ব জায়গা রয়েছে সেখানে কার্যালয় নির্মাণ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলগুলোতে যদি এর কার্যালয় গড়ে ওঠে তাহলে এর কার্যক্রম আরও বিস্তৃতি লাভ করবে।

তিনি গার্ল গাইডস’র সদস্য এবং শাপলা কাব এওয়ার্ড প্রাপ্তদের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা একদিন এই গণভবনের প্রান্তরে স্কাউটস এবং গার্ল গাইডস’র সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং সেই কথা চিন্তা করেই আজ সবাইকে এখানে আমন্ত্রণ জানিয়ে এনেছি।

আজ সবার পদচারণায় গণভবনের মাটি ধন্য উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা কোমলমতিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মনে হয় যেন শত শত, হাজার হাজার ফুল ফুটে আছে এই গণভবনের বাগানে।

তথ্যসূত্র: বাসস।

 

এমএইচ/ এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি