বাস নেই, দুর্ভোগ চরমে
প্রকাশিত : ১১:৪৭, ২ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১৩:২৪, ২ আগস্ট ২০১৮
রাজধানীর সড়কগুলোতে গণপরিবহণের সংকট চরমে। আন্তজেলা চলাচলকারী বাস তো নে-ই। গুরুত্বপূ্র্ণ সড়কগুলোতে যাত্রীবাহী বাস কদাচিৎ চলতে দেখা গেছে। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই নগরবাসীর। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অফিসগামী লোকজনের।
বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ীদের বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গত তিনদিনের বিক্ষোভে যানবাহন ভাঙচুরের প্রতিবাদে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাস পরিবহন মালিক সমিতি। তারা নিরাপত্তার বিষয়টিই সামনে নিয়ে আসছে।
বনানী, মহাখালী, ফার্মগেট, শাহবাগ, মতিঝিল, পল্টন এলাকায় অফিস সময়ে অন্যান্য দিন যেখানে যানজট লেগে থাকে সেখানে আজ দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এসব এলাকায় গণপরিবহন নেই বললেই চলে। স্টপেজগুলোতে মানুষের ভিড় লেগে আছে। সবাই বাসের অপেক্ষায়। সকাল থেকে শুরু হওয়া গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি এই দুভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েচে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তরা থেকে বনানী, মতিঝিল বা রাজধানীর অন্য কোনো এলাকায় যেতে গিয়ে সাধারণ নাগরিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সাধারণত সকালে সাড়ে আটটায় উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কের মোড়ে যে সংখ্যক বাস থামতো, বৃহস্পতিবার সকালে তার ছিলো হাতে গোনা কয়েকটা।
মিরপুর-মতিঝিল, মোহাম্মদপুর-সায়েদাবাদ, উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচলকারী নিয়মিত বাসগুলো সড়কে প্রায় দেখাই যায়নি। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দেখা যায়, রোকেয়া সরণি, প্রগতি সরণি, এয়ারপোর্ট রোড, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ প্রায় ফাঁকা। কয়েকটি বাস চলাচল করছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় সংখ্যায় অত্যন্ত নগণ্য।
মিরপুর থেকে কারওয়ান বাজারগামী ব্যাংক কর্মকর্তা সাদ বিন মাহমুদ বলেন, সকাল ৮টার মধ্যে তাঁকে অফিসে পৌঁছাতে হয়। তিনি মিরপুর ১২ নম্বরের রাস্তায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু কোনো বাস মিরপুর থেকে ছেড়ে যায়নি।
ফার্মগেট থেকে উত্তরায় অফিসে যাবেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আজহারুল ইসলাম। তিনি সকাল সাড়ে ৯ টায় জানান, দুই ঘন্টা ধরে বাসের অপেক্ষায় আছেন। শাহবাগ থেকে হেটে হেটে ফার্মগেটে এসেছেন কিন্তু উত্তরাগামী কোনো বাসের নাগাল পান নি।
ওই যাত্রীর মতো হাজারো মানুষ রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আজ সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমা, গণমাধ্যম, শপিংমল ইত্যাদি খোলা রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অফিসগামী মানুষের ঢল নেমেছে রাস্তায়।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই দুপুরে ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের পাল্লা দিচ্ছিল। এসময় বাসের জন্য অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের উপর বাস উঠিয়ে দেয় চালক। এতে ঘটনাস্থলেই দুই তাজা প্রাণ ঝড়ে যায়। আহত হন আরও কয়েকজন। হতাহত শিক্ষার্থীরা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আব্দুল করিম সজীব।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ফুসে উঠে শিক্ষার্থীরা। সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের থামাতে কাজ করছে আইন শৃংখলা বাহিনী। এতে যোগ দেয় শ্রমিকরাও। সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।
/ এআর /
আরও পড়ুন