সন্ধ্যায় উপকূলে আঘাত হানবে ‘আম্পান’
প্রকাশিত : ১৭:০৫, ২০ মে ২০২০ | আপডেট: ১৭:২৪, ২০ মে ২০২০
স্যাটেলাইট চিত্রে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান’র বর্তমান অবস্থান- সংগৃহীত
ইতোমধ্যে সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ উপকূলের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। আজ সন্ধ্যায় এটি সুন্দারবন উপকূল এলাকা অতিক্রম শুরু করবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় বাতাসের গতি অন্য সব ঝড়ের চেয়ে বেশি হবে বলেও জানানো হয়। এতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। তবে মোংলা ও পায়রা বন্দরে আগের মতোই ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সতর্ক সংকেতে আরও বলা হয়, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় জনিত জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় এবং দ্বিতীয় পক্ষের চাঁদের সময়ের শেষ দিনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে থেকে ১০ থেকে ১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঝড়ো হাওয়ার সতর্কতায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ফেনীতে ৭৫ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জে ২১ মিলিমিটার, চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে ফেনী ও রাঙামাটিতে ৪২ মিলিমিটার, রংপুর বিভাগের মধ্যে দিনাজপুরে ২৪, খুলনা বিভাগের মধ্যে মোংলায় ৫৮, সাতক্ষীরায় ৩৫, বরিশালে ৪৯ এবং পটুয়াখালীতে ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, আম্ফানের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্পান উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আম্পান আজ বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করবে। উপকূল অতিক্রম করার সময় অনেকখানি সময় ব্যয় হবে। তবে এতে আম্পানের শক্তি কমে যাবে এটা বলা যাবে না। আম্পানকে আমরা এখন আর সুপার সাইক্লোনও বলছি না। এর বাতাসের গতি অন্যসব ঝড়ের চেয়ে বেশি।’
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন