সব হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ
প্রকাশিত : ১৩:১৫, ২৭ মে ২০২০ | আপডেট: ১৩:১৬, ২৭ মে ২০২০
বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশও হু হু করে বাড়ছে করোনাক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য সবধরনের রোগীকে একই স্থানে রেখে চিকিৎসা দেয়াকেও দায়ী করছেন চিকিৎসকরা।
এমন অবস্থায় দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে ভাইরাসটি বহনকারীদের পৃথকভাবে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনোস্টিক সেন্টার মালিকদের সংগঠনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
গত ২৪ মে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
যেখানে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন দেশের করোনাক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন। তারা ভাইরাসটির শিকার রোগীদের একই হাসপাতালের ভিন্ন ভিন্ন অংশে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাব অনুযায়ী যেকোনো রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যা ও তার বেশি শয্যা বিশিষ্ট সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ দেওয়া হল।’
বর্তমানে করোনার শনাক্ত রোগীদের অধিকাংশই বাসা থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে করে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবার। ছড়িয়ে পড়ছে অন্য সদস্যদের মাঝেও।
করোনার জন্য কিছু হাসপাতাল নির্ধারণ করে দিয়ে সেখানে বাকিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল এতদিন। আবার, সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে অনেক।
এর আগে গত ১১ মে সরকারি হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে একটি নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। যেখানে রোগীদের চিকিৎসা দিতে অপারগতা জানালে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে সাধারণ রোগীরা সমস্যায় পড়ছেন। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার এবং অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধা পাচ্ছেন।
ওই চিঠিতে সব সরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ সন্দেহে আসা রোগীদের চিকিৎসায় আলাদা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, কোনোভাবেই রোগীদের ফেরত না পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়ালাইসিস করছেন, কোভিড-১৯ হাসপাতাল থেকে ডায়ালাইসিসের জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে এবং হৃদরোগ ও অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত না হলে তাদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ওই চিঠিতে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পারসন ও অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান খান গণমাধ্যমকে বলেন, উন্নত দেশগুলোও কিন্তু এবার হিমশিম খাচ্ছে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ করোনা পেশেন্টের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। একটি উন্নয়নশীল একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছে, সকল পেশেন্টকে প্রপার চিকিৎসা দেওয়ার জন্য।’
তিনি বলেন,‘সব ধরনের রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য দেশের সকল হাসপাতাল এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুযায়ী দেশে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনার শিকার ৩৬ হাজার ৭৫১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৫২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বেঁচে ফিরেছেন ৭ হাজার ৫৭৯ জন।
এআই//
আরও পড়ুন