করোনাকালে সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৮ নির্দেশনা
প্রকাশিত : ২২:৫২, ৩০ মে ২০২০
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টানা ৬৬ দিনের ছুটির পর রোববার অফিস খুলছে। এর আগে কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১৮ নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সরকারি তথ্যবিবরণীতে এসব নির্দেশনা তুলে ধরা হয়।
‘কোভিড-১৯ এর সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের কারিগরি নির্দেশনা’ এমন শিরোনামে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ নির্দেশনা প্রণয়ন করেছে। এই নির্দেশনায় বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের জন্য করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো:
১. কাজ আবার শুরু করার আগে মাস্ক, তরল হ্যান্ড সোপ, জীবাণুনাশক, স্পর্শবিহীন থার্মোমিটার এবং অন্যান্য মহামারী প্রতিরোধক জিনিসপত্র সরবরাহ করতে হবে এবং একটা জরুরি কর্মপরিকল্পনা রাখতে হবে এবং তার জবাবদিহি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২. প্রতিদিন কাজের আগে ও পরে কর্মীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করুন। যাদের জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য উপসর্গগুলো দেখা দেবে তাদের স্ক্রিনিংয়ের জন্য সময়মতো চিকিৎসা করা উচিত।
৩. ইউনিটের স্টাফ এবং বাইরে থেকে যারা আসবে তাদের শরীরের তাপমাত্রা মাপতে হবে। যাদের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে না তাদেরকে ইউনিটে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
৪. অফিস, ক্যান্টিন ও টয়লেটে ভেন্টিশেলন সুবিধা বাড়াতে হবে। সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এয়ার কন্ডিশনারের স্বাভাবিক ক্রিয়াকে নিশ্চিত করুন, বিশুদ্ধ বাতাস বৃদ্ধি করুন এবং সকল এয়ার সিস্টেমের ফিরে আসা বাতাসকে বন্ধ রাখুন।
৫. ক্যান্টিন, ডরমিটরি, টয়লেটসহ অন্যান্য জায়গা পরিস্কার রাখতে হবে এবং জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৬. সীমিত পরিসরে অর্থাৎ একবারে কম সংখ্যক লোক কম সময়ের খাওয়া শেষ করবে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে খাবার খেতে হবে।
৭. কাগজবিহীন ও সংস্পর্শবিহীন অফিস ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করতে হবে।
৮. ব্যক্তিগত মেলামেশা বা একত্র হওয়া কমাতে হবে এবং একত্র হতে হয় এমন কাজ যেমন মিটিং, ট্রেনিং এসব কাজ সীমিত করে ফেলতে হবে।
৯. অফিস, ক্যান্টিন, টয়লেটে হাত ধোয়ার জন্যে সাবান অথবা জীবাণুনাশক সরবরাহ করতে হবে, যদি হাত ধোয়ার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. কর্মচারীরা একে অপরের সংস্পর্শে আসার আগে মাস্ক পরবে। যখন হাঁচি অথবা কাশি দেবে তখন মুখ এবং নাক, কনুই অথবা টিস্যু দিয়ে ঢেকে নেবে। ব্যবহৃত টিস্যু ঢেকে ডাস্টবিনে ফেলবে। হাঁচি-কাশি শেষে তরল হ্যান্ড সোপ দিয়ে হাত ধুতে হবে।
১১. পোস্টার, সচেতনতামূলক ভিডিও এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
১২. জরুরি পৃথকীকরণ এলাকা স্থাপন করুন। যখন কেউ সন্দেহভাজন হবে, সময়মতো জরুরি স্থানে তাদের সাময়িকভাবে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো এবং চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করুন।
১৩. যদি কোনো এলাকাতে একটা কোভিড-১৯ কেইস পজিটিভ হয় তাহলে ওই এলাকার এয়ার কন্ডিশন সিডিসি’র গাইডলাইন অনুযায়ী জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং কাজ পুনরায় শুরু করা যাবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যগত পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা বা হাইজিন নিশ্চিত করা যাবে।
১৪. নমনীয় কর্মঘণ্টা ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করতে হবে।
১৫. মানসিক ও মনঃসামাজিক বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
১৬. মোটিভেশনাল কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের আশ্বস্ত ও চাঙ্গা রাখতে হবে।
১৭. কর্মচারীদের কেউ অসুস্থ বোধ করলে বা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তার ও তার পরিবারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো মাথায় রেখে তাকে সরকারি বিধি মোতাবেক যথাসাধ্য সহায়তা দিতে হবে।
১৮. ঝুঁকিপুর্ণ কাজে নিয়োজিতদের বীমা বা প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ থেকে চলা সাধারণ ছুটি ৭ দফায় বাড়ানোর পর ৩১ মে পর আর তা বাড়াচ্ছে না সরকার। ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সময় স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরে অফিসে আসতে বলা হয়েছে। তবে বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তান সম্ভবাদের এ সময় অফিসে আসা মানা।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন