ঢাকা, সোমবার   ৩১ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাজেটে করোনা এবং অর্থমন্ত্রীর আশাবাদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৩২, ১১ জুন ২০২০ | আপডেট: ২০:৪০, ১১ জুন ২০২০

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। ছবি- পিআইডি

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। ছবি- পিআইডি

Ekushey Television Ltd.

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটকে এক কথায় বলা যায়, করোনাময় বাজেট। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের গোটা বাজেট বক্তৃতায় করোনা প্রসঙ্গ বার বার ফিরে এসেছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতার শুরুতে জাতীয় জীবনে ২০২০ ও ২০২১ সালের গুরুত্ব তুলে ধরেন। ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী এবং ২০২১ সাল স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তি। বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেছেন, আমরা আত্মপ্রত্যয়ী ছিলাম জাতির পিতার জন্মবার্ষিকীর এ বছর আমাদের অর্থনীতিতে দেশের সেরা প্রবৃদ্ধিটি জাতিকে উপহার দিবো। কিন্তু করোনার প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতির হিসাব-নিকাশকে সম্পূর্ণ ওলট-পালট করে দিয়েছে।

করোনাভাইরাস সংকটময় পরিস্থিতি এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে মানুষের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তায় রেখে এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ: ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’।

অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে ‘সঠিকভাবে মোকাবেলা ও এর অর্থনৈতিক প্রভাব দৃঢ়তার সাথে কাটিয়ে ওঠার’ স্বার্থে এবার গতানুগতিক বাজেটের ধারা থেকে কিছুটা সরে এসেছি। সে কারণে এবারের বাজেটে সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে কাঠামো পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতকে এবার সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এ খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বাজেটে বরাদ্দের টাকায় জেলা পর্যায়ের হাসপাতালের পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের (বিআইটিআইডি) সক্ষমতা বাড়ানো হবে।

বলা যায়, বাজেটে প্রবৃদ্ধি বরাদ্দ, রাজস্ব আয় সবকিছুজুড়েই স্থান করে নিয়েছে করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯। করোনার জন্য একদিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর ছাড় দিতে হয়েছে। অপরদিকে করোনা মোকাবেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় চারটি প্রধান কর্ম-কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। তা হলো- সরকারি ব্যয়ে বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা, উদ্যোক্তাদের জন্য কম সুদে ঋণ সুবিধা দেয়া, হত দরিদ্রের জন্য সামাজিক সুরক্ষা বাড়ানো এবং বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানো।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার যে কর্মকৌশল নিয়েছে, তা বাস্তবায়নে কাজ করবে। সেইসঙ্গে কার্যকর সার্ভেইলেন্স ও ডায়াগনস্টিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, পিপিইর যোগান বৃদ্ধি এবং ভেন্টিলেটর ও আইসোলেশন ইউনিট বাড়ানোর মাধ্যমে সংক্রমণের বিস্তাররোধে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী সঙ্কটের পাশাপাশি আশাবাদের কথাও বলেছেন বার বার। শেষ পর্যায়ে তিনি বলেছেন, ‘যে অমানিশার অন্ধকার আমাদের চারপাশকে ঘিরে ধরেছে, তা একদিন কেটে যাবেই। ইতিহাস সাক্ষী, বাঙ্গালী জাতি শৌর্যবীর্য্যের এক মূর্ত প্রতীক। জাতীয় জীবনে কালক্রমে যে সকল সঙ্কট ও দুর্যোগ এসেছে, বাঙ্গালী জাতি সম্মিলিত শক্তির বলেই সেসব থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে। জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা শত্রুর মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করেছি। তেমনিভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সবাই এক পরিবার হয়ে, একে অপরের সাহায্যে করোনাভাইরাস মোকাবিলা যুদ্ধেও আমরা জয়ী হবো।’

এ সময় অর্থমন্ত্রী পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত তুলে ধরে বলেন, ‘এই ক্রান্তিকালে বিভ্রান্ত, ভীত বা আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের ধৈর্য্য এবং সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। ’ তিনি বলেন, মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনের সূরা আল বাক্বারাহ’র ১৫৫ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেছেন- ‘আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই: মাঝে মধ্যে তোমাদেরকে বিপদের আতঙ্ক, ক্ষুধার কষ্ট দিয়ে, সম্পদ, জীবন, পণ্য-ফল-ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে। আর যারা কষ্টের মধ্যেও ধৈর্য্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করে, তাদেরকে সুখবর দাও। [আল-বাক্বারাহ ১৫৫] ’

আ হ ম মুস্তাফা কামাল আরও বলেন, ‘সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি তার সৃষ্টির অকল্যাণে কিছুই করেন না, যা করেন কল্যাণের জন্যই করেন। তাই অবশ্যই অচিরেই তিনি তার কল্যাণের সুশীতল ছায়ায় আমদেরকে আশ্রয় দিয়ে এই মহামারী ভাইরাস থেকে সকলকে পরিত্রান দান করবেন এবং আমরা ফিরে যাবো আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়, উন্মোচিত হবে এক আলোকিত ভোরের।’

এনএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি