ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:২৭, ২৪ জুন ২০২০

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি (কপ২১) বাস্তবায়নে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনএসসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ জুন) বার্লিন ক্লাইমেট অ্যান্ড সিকিউরিটি কনফারেন্স ২০২০ চলাকালে ভিডিও বিবৃতিতে মোমেন এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আর মোটেও জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুটি এড়িয়ে যেতে পারে না। একটি নিরাপদ বিশ্বের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সাথে পরামর্শের মাধ্যমে তাদেরকে একটি দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিন।’

বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করেছেন যে, দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা পরিষদ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটিকে এড়িয়ে গেলে অনেক দেশের এবং বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা সমস্যা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। মোমেন এ বিষয়ে আরো বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে সহায়তা করতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান দিতে হবে।

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টা জোরদার করার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জলবায়ুর ইস্যুটি শুধুমাত্র আমাদের উন্নয়ন বা নিরাপত্তার ইস্যু নয়, বরং এটি আমাদের অস্তিত্বের ইস্যু। আর তাই সকল রাষ্ট্রকে সম্মিলিতভাবে এই বৈশ্বিক সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে। আমাদেরকে অবশ্যই প্যারিস চুক্তি মেনে চলতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও পৃথিবীর মানুষের কল্যাণে স্বার্থে আমাদেরকে অবশ্যই এটা বাস্তবায়ন করতে হবে।’

পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করার জন্য তিনি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সকল দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই একসাথে কাজ করতে হবে।’
বিশ্বের জন্য কোভিড-১৯ মহামারীকে একটি সতর্ক বার্তা হিসেবে অভিহিত করে ড. মোমেন বলেন, যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশী বৃদ্ধি পায়, তবে তা শুধু বাংলাদেশ বা মালদ্বীপের জন্যই না, বরং ‘যেসব নগরী ও শহরের জন্য আমরা গর্ব করি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যও সেগুলোর অস্তিত্ব থাকবে না।’

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি পেলে দেশটির এক-পঞ্চমাংশ ভূখন্ড বিলীন হয়ে যাবে। আর এমনটা ঘটলে ৩ কোটি থেকে ৪ কোটি লোক আবাসস্থল হারাবে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি কোটি কোটি লোক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়, তবে তা শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, বরং গোটা অঞ্চলের জন্যই নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে দেখা দিবে।’

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার মানুষ ইতোমধ্যে শহরগুলোতে চলে এসেছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, বিশ্বের যেসব দেশের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে যথাযথ প্রক্রিয়ায় এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে শহরে চলে আসা হাজার হাজার মানুষের বাড়িঘর, আবাদি জমি সবকিছু বিলীন হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৪৮টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সমন্বয়ে গঠিত ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)-এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও এর সাথে খাপ খাওয়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা অত্যন্ত জরুরি।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি