চুলে কলপ, গোঁফ কেটেও শেষ রক্ষা হলো না সাহেদের
প্রকাশিত : ১৮:২০, ১৫ জুলাই ২০২০
এক সময় হাবভাবে যে লোকটি মধ্য বয়স্ক সেজে থাকতেন। পরিপাটি ভদ্রলোক হয়ে ঘুরে বেড়াতেন। সেই ‘জেন্টালম্যান’ নাকি বোরকা পড়ে পালাতে চেয়েছিলেন। চেহারা বদলের জন্য মাথার সাদা চুল কালো করলেন। অভিজাত্যের গোঁফখানাও টেকে ফেললেন। নৌকা যোগে জলপথে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। হ্যাঁ তিনি রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ। সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে নৌকা যোগে ভারতে পালানোর সময় জেলার দেবহাটা থানার ইছামতী নদীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। তাকে গ্রেফতারের জন্য আগেভাগেই ওঁৎ পেতে ছিলেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। আর ভোর সাড়ে পাঁচটায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গত ৯ দিন ধরে তাকে অনুসরণ করা হচ্ছিল। ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তনের কারণে গ্রেফতারের খুব কাছাকাছি পৌঁছাতে পারলেও অল্পের জন্য মিস করেছি। পরশুদিন রাত থেকে তাকে অনুসরণ করে গ্রেফতার করা হয়।’
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, সীমান্ত পার হওয়ার জন্য মাছ ধরার নৌকায় উঠেছিল সাহেদ। নৌকায় ওঠার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। সীমান্ত পার হতে স্থানীয় কয়েকজন দালাল তাকে সহায়তা করছিল। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করতে চেয়েছিলেন সাহেদ।
গ্রেফতারের পর তাকে হেলিকপ্টার যোগে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়। এর আগে গত ১৩ জুলাই সাহেদের ফোন ট্র্যাক করে তার খোঁজে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে তল্লাশি চালায় র্যাব ও পুলিশ। তবে সেখানে তাকে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সাহেদকে ধরতে ১৪ জুলাই থেকে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকায় চিরুনি অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী। জেলা পুলিশ সীমান্তে যাওয়ার পথে প্রায় সব গাড়িতে রাত দিন তল্লাশি চালায়। একই সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সীমান্তে টহল জোরদার করে।
উল্লেখ্য, ৬ জুলাই র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালায়। পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল তারা। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অন্তত ছয় হাজার ভুয়া করোনা পরীক্ষার সনদ পাওয়ার প্রমাণ পায়। একদিন পর গত ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে র্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ওই দিনই উত্তরা পশ্চিম থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করে র্যাব। এরপর থেকে সাহেদ পলাতক ছিল।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন