চাকরির লোভ দেখিয়ে ডান্সবারে পাচার হচ্ছে বাংলাদেশি নারীরা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:৫২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০

গত আট বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে এক হাজারেরও বেশি নারী। উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে তাদেরকে পাচার করা হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সিআইডি বলছে, পাচারকারী চক্রের বেশ কয়েকজনকে আটক করা গেছে। পাচারের সাথে যুক্ত ৭/৮টি চক্র পুরোপুরি নির্মূল না হলেও এ ধরনের অপরাধ এখন নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই দাবি সিআইডির।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাঙালি মালিকানাধীন ডান্সবার আছে ৫০র্টিও বেশি। চাকরির লোভ দেখিয়ে পাচার হওয়া বাংলাদেশি নারীদের এসব ডান্সবারে আনা হয়। প্রতারিত এসব নারীরা যাতে পালাতে না পারে সে জন্য তাদেরকে রাখা হয় কড়া পাহারায়। মাঝে মাঝেই তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। ভুক্তভোগী কয়েকজনের ভয়েস রেকর্ড এসেছে একুশে টেলিভিশনের হাতে।
পাচার হওয়া নারী মনি জানান, আমাকে নেওয়া হয়েছে ওয়েটার ভিসায়। গেস্ট আসলে তাদেরকে খাবার পরিবেশন করতে হবে। প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার কথা। গেস্ট আসুক বা না আসুক বিকাশের মাধ্যমে বেতন পরিশোধের কথা বলেছিল। কিন্তু ৭ মাস হয়েছে এ পর্যন্ত এক টাকাও আমাকে দেয়নি। আমার বাবা স্ট্রোক করেছে এ কথা বলার পরও টাকা পাইনি।
পাচার হওয়া আরেক নারী উর্মিলা বলেন, তিন মাস হলো এসেছি, এর মধ্যে ক্লাবে কোন বিজনেস হয়নি।
স্বপ্না বলেন, আমার ভিসা বাড়ান লাগবে না, ইমার্জেন্সি বাড়িতে যেতে হবে আমাকে। মাকে আমি ছাড়া দেখার কেউ নেই।
দালালদের এই অডিও রেকর্ড প্রমাণ দিচ্ছে অনেক কিছুর। দালাল চক্রের এক সদস্য বলেন, মেয়ে তো ভাল আছে, কথাবার্তা বলে টাকা নিয়ে যাবেন সমস্যা নেই।
জুলাই মাসে এরকমই একটি দালাল চক্রের হোতা আজমকে বেশ কয়েকজন সঙ্গীসহ গ্রেফতার করে সিআইডি। এদের কাছ থেকে পাওয়া যায় চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য।
সিআইডি প্রধান ব্যারিষ্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের মেয়েদেরকে নিয়ে তারা বিভিন্ন ক্যাবেতে ব্যবহার করে। দুবাইতে একটা লিং লিডারকে গ্রেফতার করেছি এবং তার পুরো গ্রুপটাকে আমরা ধরেছি। আরও কয়েকটি গ্রুপ আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এখন সেগুলো ইনভেস্টিগেশন করছি। ইনভেস্টিগেশনে প্রুফ হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চক্রগুলোকে পুরোপুরো নির্মূল করা না গেলেও তারা কোণঠাসা অবস্থায় আছে বলে দাবি করেন সিআইডি প্রধান।
ব্যারিষ্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা ইনকোয়ারিতে যেভাবে এভিডেন্স পাচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে আরও থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি অল্প কিছু দিনের মধ্যে এদেরকে বের করতে পারবো।
সিআইডি প্রধান জানান, পাচারকারী চক্র পুরোপুরি নির্মূলে সক্রিয় আছেন তারা।
এএইচ/এমবি
আরও পড়ুন