ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

‘আস্থাহীনতা করোনা পরবর্তী উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করবে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪৬, ১ অক্টোবর ২০২০ | আপডেট: ১৯:৪৮, ১ অক্টোবর ২০২০

ওয়েবিনারে বক্তারা

ওয়েবিনারে বক্তারা

রাষ্ট্র, নাগরিক ও সমাজের মধ্যে আস্থাহীনতা কোভিড-১৯ পরবর্তী বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত একটি ‘ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে মহামারী পরবর্তী বিশ্বে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারের বক্তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন। 

রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস স্টাডিস ও অষ্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ’র পরামর্শক ড. ক্যাথরিন লি’র বক্তব্যের মাধ্যমে ওয়েবিনার এর সূচনা হয়। তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত করুন।’ 
কোভিড পরবর্তী বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও বহুপাক্ষিক আরও সহযোগিতার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। 

কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় এখনই যথাযথ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলেন বক্তরা। 
কোভিড-১৯ ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, দারিদ্র, অর্থনৈতিক ও লিঙ্গীয় অসমতাসহ আরও নানাামূখী সমস্যার জন্ম দিচ্ছে যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিশেষ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে। আর তাই কোভিড পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের মধ্যে যেন আস্থাহীনতা তৈরি না হয় সেদিকে নজর দিতে তাগাদা দেন বক্তারা। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও সংস্কার এর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে জাতীয় পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করে কোভিড পরবর্তী অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নেবার পরামর্শও দেন তারা। 

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমাদের সামগ্রিক সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে এবং প্রবৃদ্ধি ঠিক রেখেই কোভিড পরবর্তী সমস্যাগুলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি সমাজের সকল স্তরের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য একযোগে সমন্বিত প্রচেষ্টা নেবার কথা বলেন।’

ইউএনডিপি’র বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী সামাজিক সুরক্ষার উপর জোর দিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজের আহ্বান জানা। তিনি বলেন, ‘কোভিড পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উন্নয়ন কার্যক্রম হতে হবে পরিবেশ বান্ধব, অন্তর্ভক্তিমূলক ও পক্ষপাতশূন্য।’ গ্রিফিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তপন সরকার বলেন, ‘কভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী ও সহযোগিতা ভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে যেন স্বাস্থ্য খাতের পাশাপাশি দারিদ্র, অসমতা ও শিক্ষাখাতের চ্যালেন্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে পারে।’
 
এ প্রসঙ্গে এস আই পি জি এর পরামর্শক অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেন, ‘কোভিড-১৯ আমাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার উপর জনমনের ভরসার অভাবকে প্রকটভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। যে কারণে কোভিড পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বাস্থ্য খাতকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর কোন বিকল্প নেই।’

অষ্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. শরীফ আহমেদ মুকুল বলেন, ‘কোভিড পরবর্তী নানাবিধ সমস্যা নিয়ে কাজ করার সময় পরিবেশ বান্ধব কার্যক্রম এর উপর গুরুত্ব দিতে হবে।’
 
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনষ্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের (এস আই পিজি) এর জ্যেষ্ঠ ফেলো শহীদুল হক বলেন, ‘জনগনের দাবী ও স্বার্থকে সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে নতুনভাবে বিবেচনায় আনতে হবে। প্রয়োজনে নতুন করে বৈশ্বিক ডায়ালগ তৈরির প্রচেষ্টা হাতে নিতে হবে।’
 
সমাপনি বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোভিড-১৯ নানা রকম সমস্যা নিয়ে আসছে।’

ড. বুলবুল সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনষ্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হক, সিপিএর’র সমন্বয়ক ড. এম জসিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত অতিথিবৃন্দ।

এমএস/এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি