পদ্মা সেতু রেলের জন্য ভাঙ্গায় স্লিপার ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন শুরু
প্রকাশিত : ২১:৪৯, ৩ ডিসেম্বর ২০২০
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য ভাঙ্গায় স্লিপার ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন শুরু হয়েছে। আজ ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় সিআরইসির তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের স্লিপার ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা পরিদর্শন করেছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনসহ সরকার ও সিআরইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক শামসুজ্জামান, পিবিআরএলপি প্রকল্প পরিচালক ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও সিআরইসির প্রকল্প পরিচালক ওয়াং কুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
পরিদর্শনকালে ওয়াং কুন বলেন, চলতি বছরের ২২ আগস্ট স্লিপার ফ্যাক্টরিটি ছোট পরিসরে উৎপাদন শুরু করে। এখন পর্যন্ত ফ্যাক্টরিটি খুব ভালোভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং এখান থেকে উৎপাদিত স্লিপারগুলো বেশ উন্নতমানের। এছাড়াও স্লিপার-লেইং বেসটিতে বর্তমানে দুইশ’ স্থানীয় কর্মি কাজ করছেন, যারা সিআরইসির সিনিয়র চীনা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পেশাদার প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন বলে জানান তিনি।
প্রকল্প পরিচালক জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের অনুমতি সাপেক্ষে বর্তমান প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক প্রকিউরমেন্ট অনিশ্চয়তা দূর করতে, গুণগতমানের স্লিপার প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্লিপার তৈরি ও সরবরাহ করতে, নির্মাণ ব্যয় কমাতে এবং চীন থেকে অত্যাধুনিক ও উন্নতমানের প্রযুক্তি পণ্য আমদানির জন্য সিআরইসি স্লিপার ফ্যাক্টরিটি তৈরি করেছে। স্লিপার ফ্যাক্টরিটি স্লিপার-লেইং বেসের অংশ।
ওয়াং কুন বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারির শুরু থেকে বাংলাদেশ ও চীনা কর্মিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে সিআরইসি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সিআরইসি প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ, সার্বক্ষণিক নজরদারি, প্রতিদিন জীবাণুনাশকরণ, কঠোর কোয়ারেন্টিন সিস্টেম (যেখানে চীন থেকে আমদানিকৃত পর্যাপ্ত মেডিকেল উপকরণ ব্যবহার করা হয় এবং এই প্রকল্পে অভিজ্ঞ চীনা চিকিৎসকরা কাজ করেন) বজায় রাখে।’ ‘প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অর্জনের মাধ্যমে সিআরইসি পুরোদমে পিবিআরএলপি তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে পারবে বলেও জানান তিনি।
আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাংলাদেশের মধ্য পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হলে এটি বাংলাদেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলকে সংযুক্ত করবে এবং এটিই তখন এই দু’টি অঞ্চলের মধ্যে যাত্রী ও পণ্যবাহী বাহন পরিবহনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রেলপথটি ঢাকা স্টেশন থেকে শুরু হয়ে মাওয়া, পদ্মা বহুমূখী সেতু (নির্মাণাধীন) এবং ভাঙ্গা হয়ে যশোরে গিয়ে শেষ হবে। নতুন লাইনের সর্বমোট দৈর্ঘ্য হবে আনুমানিক ১৬৮.৮ কি.মি.। এছাড়াও, চীনের এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে পিবিআরএলপি দেশের সর্ববৃহৎ জিটুজি ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রকল্প।
পিবিআরএলপির জন্য স্লিপার ফ্যাক্টরিটি নির্মাণ করেছে পিবিআরএলপির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিআরইসি। কারখানাটি ১.৮১৫ একর এলাকাজুড়ে অবস্থিত, ফ্যাক্টরিতে ১০৪ মোল্ড সেট, ১৬টি স্টেশন, ৬টি স্টিম কিউরিং পিটস এবং ২টি স্কাই ক্রেন ব্যবহার করা হয়েছে। স্লিপার ফ্যাক্টরিটি পুরোপুরি স্টিল স্ট্র্যাকচারে ঘেরা ও অটোমেটিক অ্যাসেম্বলি লাইন অপারেশনের মাধ্যমে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই কারখানার সবগুলো ইক্যুইপমেন্ট সিআরইসি সরবরাহ করেছে এবং এগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ে নির্মাণ উপযোগী করে ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে এশিয়া ও ইউরোপের স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করা হয়েছে। এই কারখানা থেকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ’রও বেশি স্লিপার তৈরি করা যাবে।
এসি
আরও পড়ুন