ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ-ভারত আরো দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবে: মোমেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৪, ৭ ডিসেম্বর ২০২০

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, আগামী বছর বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা ও নয়াদিল্লী আরো অধিক দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হবে। তিনি রোববার ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করা যাবে।’ ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা পদক বিজয়ী কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ জহির, প্রখ্যাত মানবাধিকার কর্মী জুলিয়ান ফ্রান্সিস এবং সমাজকর্মী আরোমা দত্ত বক্তব্য রাখেন।

ড. মোমেন বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের দুই প্রধানমন্ত্রী ডিসেম্বরে আমাদের বিজয় দিবস উদযাপনকালে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খুশি যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অংশ নিবেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ইতিহাস, ভাষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অভিন্ন। এই ঐক্য আমাদের মধ্যকার বহুমাত্রিক ও সম্প্রসারণশীল সম্পর্কের মাঝে প্রতিফলিত।

মোমেন বলেন, ‘ভারত আমাদের ঐতিহাসিকভাবে পরীক্ষিত বন্ধু। আমরা সভ্যতা, সংস্কৃতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বন্ধনে আবদ্ধ।’ তিনি বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল ‘মুক্ত বিশ্ব’ এবং গণতন্ত্রের জন্য একটি বিরাট বিজয়। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয় গণতান্ত্রিক আদর্শ ও জনগণের দৃঢ় সংকল্পের বিজয়। এই জনগণ নিজ মাতৃভূমির জন্য অশ্রু ও ও রক্ত বিসর্জন দিয়েছে যাতে চরমপন্থা ও শোষণ থেকে মুক্ত হয়ে তারা নিজের ভাষায় কথা বলতে পারে, তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি লালন করতে পারে এবং মর্যাদার সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারে।

ড. মোমেন বলেন, ‘শুধু আমাদের নিজেদের মুক্তির জন্যই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী একটি সার্বজনীন মুক্তি, বহুত্ববাদ, ধর্মীয় সম্প্রীতি, মানবাধিকার এবং একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে আমরা সমরাঙ্গণে অস্ত্র ধরেছিলাম।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাঙালী বীর ও বিজয়ী জাতি। আমরা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এমন একটি দেশ বিশ্বে পিছিয়ে থাকতে পারে না।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে ভারত সরকার মুক্তিবাহিনীকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সংগঠিত করে একটি দক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলে। পাশাপাশি ভারত সরকার আমাদেরকে সব ধরণের সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে বহু ভারতীয় সৈন্য ও জোয়ান প্রাণ দিয়েছেন। তাদের রক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে মিশে আছে। আমরা কখনোই তাদের এই আত্মত্যাগকে ভুলে যাব না।’

১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে ভারত সরকার ভারতীয় ও বাংলাদেশী ফোর্সের যৌথ কমান্ড গঠন করে। পাশাপাশি ৬ ডিসেম্বর তারিখে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয় এবং একটি নবযুগের সূচনা করে।

ড. মোমেন সেই সময়ের আবেগ ও অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে আবেগাব্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘ওই দিন আমাদের হৃদয় ও প্রাণে যে খুশির জোয়ার বইছিল তা কখনোই ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর নয়াদিল্লী বাংলাদেশের সরকার গঠনেও সহায়তা দিয়েছিল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি