ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পদ্মাসেতুর লভ্যাংশ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়তি সহায়তা (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:১৫, ১০ জানুয়ারি ২০২১

‘পদ্মাসেতু’ উন্নয়নের প্রতীক। নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পুরো জাতির স্বপ্নের সেতু জেগে উঠেছে প্রমত্তা পদ্মার বুকে। এই স্বপ্ন বাঁচাতে কয়েক হাজার মানুষকে হারাতে হয়েছে বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি। তবে নিয়ম মেনেই ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করেছে সরকার। তারপরও সেতুর লভ্যাংশ থেকে তাদের জন্য কিছু করার কথা ভাবছে সেতু কর্তৃপক্ষ। 

পদ্মা সেতু নির্মাণে অধিগ্রহণ করা হয়েছে তিন হাজার একর জমি। এর মধ্যে শিবচরে ১ হাজার একর, জাজিরায় ১২শ’ ৭০ একর এবং মাওয়ায় ৮শ’ ১৬ একর। 

যাদের পৈতৃক ভিটার উপর এই মেগা স্ট্র্যাকচার ও অন্যান্য অবকাঠামো তাদের নিরাশ করেনি সরকার। এই পরিবারগুলোর ঠাঁই হয়েছে ৭টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে। ২ হাজার ৬শ’ ৩৫টি পরিবারের প্রত্যেককে দেয়া হয়েছে, পাঁচ অথবা ৭ কাঠা করে জমি। দেয়া হয়েছে, নগদ টাকাও।

এটি একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র। সাজানো গোছানো এখানকার আবাস। আছে মসজিদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ, সুপ্রশস্ত সড়ক, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নাগরিক সব সুযোগ-সুবিধা। 

পুনর্বাসন কেন্দ্রর মানুষরা জানালেন, আমরা ভালই আছি। খেটে-পিটে আমরা খাচ্ছি। তবে ব্রিজটি হলে দূর-দূরান্ত মানুষেরই বেশি সুবিধা হবে। তাদের সুবিধার্থেই আমাদের এই ত্যাগ স্বীকার কোন ব্যাপার না, আমরা করতে পারি। 

প্রথমে সব কিছু অনিশ্চিত ছিল আর এখন শৃঙ্খলিত পরিপাটি জীবনে খুশি এই মানুষগুলো। যোগাযোগের উন্নয়ন হচ্ছে, সেতু কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক উন্নতির হাতছানিতে খুশির ঝিলিক এই মানুষগুলোকের চোখেমুখে।

জমি হারানো মানুষরা জানান, আমাদেরকে বলা হয়েছিল- আপনারা কি চান, প্লট চান না টাকা চান? আমরা বলেছিলাম আমাদের প্লট দিবেন, না হলে আমরা থাকবো কি করে। আমাদেরকে প্লট দেওয়া হয়েছে। ওই লাভের অংশ দিব না দিব এটা আমাদেরকে শুনায়নি। বর্তমানে শুনছি, আমাদেরকে লাভের কিছু অংশ দিবে। 

সেতু চালু হলে সেতুর টোলের লভ্যাংশের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়ার বিষয়ে একটি প্রস্তাব সেতু কর্তৃপক্ষের বরাবর পৌঁছেছে। 

সেতু সচিব বেলায়েত হোসেন বলেন, একটা প্রস্তাব আছে তাদেরকে লভ্যাংশের একটা অংশ দেয়ার। তবে এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের বঙ্গবন্ধু সেতুতে যেভাবে টোল আদায় করা হয়, সরকারি কোষাগারে এটা জমা হয়। সেইভাবে আমরা চিন্তাভাবনা করি। তবে স্থানীয়দের একটি ডিম্যান্ট আছে, সেটার সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রকল্প পরিচালক বলছেন, যত দিন প্রকল্প চলমান ততদিন ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করার কাজও চলবে। আর, কাজ শেষ হয়ে গেলেও টোলের লভ্যাংশ থেকে এই মানুষগুলোর জীবন মান উন্নয়নের কথাও ভাবা হচ্ছে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদেরকে পরবর্তী পর্যায়ে আমরা কি করতে পারি তা চিন্তা-ভাবনার মধ্যে আছে।

সেতু সচিব আরও বলেন, তাদেরকে আরও স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য দুই প্রান্তে দুটি হাসপাতাল করে দেয়া হয়েছে। 

পদ্মা সেতু নির্মাণে যেমন ছাড়তে হয়েছে পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি-জমিজিরাত আবার সেই পদ্মাসেতুই অপরিকল্পিত অগোছালো জীবনকে এনেছে পরিকল্পিত জীবন ব্যবস্থায়। চলাচল ও যোগাযোগে এনেছে স্বস্তি। এরপরও যদি পুনর্বাসিত এই মানুষগুলো পদ্মাসেতুর টোল থেকে কিছুটা হলেও সুবিধাভোগী হয় তবে তা তাদের জন্য হবে বাড়তি পাওয়া।
ভিডিও :


এএইচ/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি