বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাশিয়ার প্রকৃত বন্ধু : লাভরভ
প্রকাশিত : ১০:৪৮, ২০ মার্চ ২০২১
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভিক্টোরিভিচ লাভরভ বলেছেন, রাশিয়া বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এক অসামান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে স্মরণ করে। কেননা, বঙ্গবন্ধু তাঁর দেশের জনগণের স্বাধীনতা ও সুখের জন্য একনিষ্ঠ যোদ্ধা হিসাবে নিবেদিত ছিলেন এবং তিনি ছিলেন রাশিয়ার প্রকৃত বন্ধু।
তিনি আজ এখানে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দশ দিনের বিশেষ কর্মসূচির তৃতীয় দিনে একটি ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সম্মানীত অতিথি হিসাবে যোগ দেন।
লাভরভ বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধু প্রথম বাংলাদেশী শীর্ষকর্মকর্তা হিসেবে সরকারিভাবে মস্কো সফর করেন।
তিনি বলেন, ‘তখনই পারস্পারিক স্বার্থে সাম্যতা, শ্রদ্ধা এবং বিবেচনার নীতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক তৈরির ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পূর্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপনের সঙ্গে কাকতালীয় ভাবে মিলে গেছে।
সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, পূর্ববাংলার জনগণ নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের অধিকারের জন্য অনেক উচ্চ মূল্য দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সমর্থন দেয় এবং যুদ্ধবিধ্বস্থ অর্থনীতি পুনর্গঠনে যথেষ্ঠ অবদান রাখে।’
লাভরভ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে পুতে রাখা মাইন অপসারণ করে বন্দরটি জাহাজ চলাচলের উপযোগী করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে ইউএসএসআর নৌবাহিনীর একটি দল বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল।
তিনি স্মরণ করেন, ‘সোভিয়েত নৌবাহিনীর নাবিকরা তাদের কাজটি সম্পন্ন করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী বছরগুলোতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিকে আমরা স্বাগত জানাই। আপনার দেশ ক্রমান্বয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করছে।’
তিনি আরো বলেন, দারিদ্র্যতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঢাকা সক্রিয়ভাবে জড়িত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে প্রধান সৈন্য প্রদানকারী দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী সংঘাত নিরসনে ব্যাপক অবদান রাখছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ইকনোমিক পার্টনার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সত্ত্বেও গত বছর আমাদের দু’দেশের মধ্যে টার্নওভার প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
তিনি বাংলাদেশের রূপপুরে নির্মাণাধীন যৌথ মেগা প্রকল্প প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ প্লান্টের কথা তুলে ধরে বলেন, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আমরা উৎপাদনে যেতে পারব বলে আশা করছি।
লাভরভ বলেন, দ্বিপক্ষীয় রাজনেতিক সংলাপ এবং পরস্পরের স্বার্থে বাস্তব সহযোগিতা চালিয়ে যেতে রাশিয়া প্রস্তুত। তিনি বাংলাদেশের জনগণের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।
এসএ/
আরও পড়ুন